চিকিৎসক না থাকায় শল্য বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক না থাকায় বুধবার সকাল থেকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের শল্য বিভাগে (সার্জিক্যাল ওয়ার্ড) রোগী ভর্তি নেওয়া বন্ধ হয়ে গেল। এ সংক্রান্ত নোটিসও ঝোলানো হয়েছে ওই বিভাগে। ফলে, বিপাকে পড়লেন বহু রোগী ও নানা কারণে জখম মানুষেরা। শল্য বিভাগে দেখাতে আসা বহু রোগী ও জখমদের এ দিন জরুরি বিভাগে দেখার পরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের অনেকে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি হন। কেউ কেউ চলে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় বলেন, “এখানে দু’জন শল্য চিকিৎসকের মধ্যে এক জন এ দিন থেকেই স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। অন্য জন ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। তিনি কাজে যোগ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগটিতে রোগী ভর্তি করা হবে না।” এই সময়ের মধ্যে বিকল্প হিসাবে অন্য কোনও শল্য চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হবে কি না, সে ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
রাজনৈতিক হানাহানি লেগেই রয়েছে আরামবাগে। তা ছাড়াও, রয়েছে পারিবারিক গোলমাল, দুর্ঘটনা। খানাকুল বা গোঘাটের প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও গুরুতর জখম মানুষদের এই হাসপাতালে আনা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, রামজীবনপুর, হাওড়ার আমতা, বর্ধমানের মাধবডিহি, বাঁকুড়ার কোতুলপুরের মতো এলাকার বাসিন্দারাও এই হাসপাতালের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল।
এ দিন হাসপাতালের শল্য বিভাগটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনেরা। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশেরও প্রশ্ন, দুই শল্য চিকিৎসকের এক জন স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন জেনেও অন্য জনের দীর্ঘ ছুটির আবেদন কী ভাবে মঞ্জুর করা হল?
একই প্রশ্নের উত্তরে সুপার জানিয়েছেন, জরুরি প্রয়োজনে এক শল্য চিকিৎসক অনেক আগেই ছুটির আবেদন করেছিলেন। তা ছাড়া, এর আগে সদ্য স্বেচ্ছাবসর নেওয়া শল্য চিকিৎসক যখন দীর্ঘ ছুটিতে ছিলেন, তখন অন্য জন টানা ‘ডিউটি’ করেছিলেন। সব মিলিয়ে তাঁর ছুটি অনুমোদন করতে হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শল্য চিকিৎসক শান্তিনাথ চোংদারের স্বেচ্ছাবসরের আবেদনটি এ দিন থেকেই কার্যকর হয়। তিন মাস আগে তিনি আবেদন করেছিলেন। অন্য শল্য চিকিৎসক সুশান সিংহ গত ২২ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন। শান্তিনাথবাবু বলেন, “শারীরিক কারণে আমি স্বেচ্ছাবসর নিয়েছি।”
রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “বিভাগটি সাময়িক ভাবে বন্ধ না করে উপায় ছিল না। সমস্যার কথা জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। বিকল্প শল্য চিকিৎসক এখনই পাওয়া যাচ্ছে না।” |