নিয়মবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে চলছে নার্সিংহোমের রমরমা |
কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে পড়ল।
কলকাতার আমরি অগ্নিকাণ্ডের পর শিলচরের নার্সিংহোমগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। সিঁদুরে মেঘ দেখেই প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত। অগ্নি নির্বাপণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ব্যবস্থা সরেজমিনে দেখতে স্বাস্থ্য ও পুলিশ কর্তাদের নিয়ে তড়িঘড়ি একটি যৌথ তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়। কিন্তু কাজে নেমেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারী দলের সদস্যদের।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন, শিলচরের ২১টি নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে পাঁচটির কাছে স্বাস্থ্য বিভাগের কোনও অনুমতিই নেই। অগ্নি নির্বাপক শংসাপত্র নেই একটি চক্ষু হাসপাতালের। সেখানে একই বিল্ডিংয়ের নীচতলায় ক্যান্টিন চলছে। রান্নাবান্না সেখানেই হচ্ছে। অন্য একটি নার্সিংহোমের শংসাপত্র থাকলেও তাদের নীচতলা আরও ভয়াবহ। চলছে হোটেল-রেস্তোঁরা। অন্য একটি হাসপাতালের জেনারেটরের কাছেই জ্বালানি-ভর্তি ড্রাম পেয়েছেন যৌথ তদন্তকারী দলের সদস্যরা। তাঁরা সমস্ত ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট যাচাই করার পরেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শিলচর আঞ্চলিক অফিস প্রথমে ৬টি নার্সিং হোমকে শো-কজ নোটিস ইস্যু করে। পরে অন্য দু’টির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। একই ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগও।
কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক স্বপনকুমার দাস জানিয়েছেন, নিয়মনীতি না মেনে কোনও নার্সিং হোমকে ব্যবসা চালাতে দেওয়া হবে না। এমনকী সেবামূলক মানসিকতাকে সামনে রেখে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদেরও বিধিনিয়ম মানতে হবে। দূষণের ঝুঁকি থাকায় তাদের বিরুদ্ধেও জেলা প্রশাসন চুপ করে বসে নেই। স্বপনবাবুই যৌথ তদন্তকারী দলের নেতা। সঙ্গে রয়েছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সিনিয়র এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার কমলকল্যাণ দত্ত, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অরবিন্দ দাস, ডিএসপি এল শইকিয়া, স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম সচিব বিজয়লক্ষ্মী দাস চৌধুরী, এইচ পি ভট্টাচার্য এবং অগ্নিনির্বাপণ দফতরের কর্তা ধনরাজ টিমং। স্বপনবাবু জানিয়েছেন, সন্তোষজনক জবাব না পেলে নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |