পুলিশ দিয়ে চালু হল স্বাস্থ্যকেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুঞ্চা |
পুলিশ মোতায়েন করে রোগী দেখা শুরু হল পুঞ্চার বাগদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বৃহস্পতিবার থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন পুলিশ কর্মী ও এক জন হোমগার্ড মোতায়েন করা হয়। ব্লক ও জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের কথায়, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার কারণে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন করার বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না বাসিন্দাদের একাংশ। |
শনিবার দুপুরে স্থানীয় এক বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে গিয়ে দেখেন স্বাস্থ্যকর্মীরা কেউ নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা ঝুলছে। এই ঘটনার কথা জেনে বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। সোমবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলতে এসে দরজায় তালা দেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা পুঞ্চার বিএমওএইচ রমেশ কিস্কুকে খবর দেন। তালা খোলা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে বচসাও হয়। পরে পুলিশ, ব্লক প্রশাসন, স্বাস্থ্য কর্তা ও বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে সে দিনই তালা খোলা হয়। তালা ঝোলানোর জন্য স্থানীয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে পুঞ্চা থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে পরের দিন থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা বন্ধ করে দেন। বিপাকে পড়েন এলাকার রোগীরা। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লাগোয়া একটি ব্যাঙ্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ ও এক জন হোমগার্ডকে দিনের বেলায় আপাত ভাবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মোতায়েন হয়েছেন। পুরুলিয়া জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (১) কৃষ্ণপদ সর্দার বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী কাজ করতে যেতে ভরসা পাচ্ছিলেন না। আবার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধও রাখা যায় না। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য আপাতত সেখানে বহির্বিভাগ চালু থাকার সময় নিরাপত্তার কারণে পুলিশ মোতায়েন থাকছে।
শুক্রবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ কর্মীরা সেখানে ঘুরে বেরাচ্ছেন। ইতি উতি রোগীরা রয়েছেন। এক জন চিকিৎসক, দু’জন নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের কাজে ব্যাস্ত। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েন করার ঘটনা মানতে পারছেন না স্থানীয়দের একাংশ। কুমারেশ মখোপাধ্যায়, মঙ্গলময় মুখোপাধ্যায়, জয়দেব দত্তরা বলেন, “এখানে নিয়মিত চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মীরা থাকেন না। সামান্য অসুখে ওষুধ মেলে না। কয়েক জন বাসিন্দা উত্তেজনাবশত তালা দিয়েছিলেন। চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কর্মীদের নিগ্রহ করা হয়নি। পুলিশ মোতায়েন করে অহেতুক জটিলতা বাড়ানো হচ্ছে। পুঞ্চার বিএমওএইচ বলেন, “স্থানীয় কয়েক জন যুবকের উস্কানিতে ওই কাণ্ড হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা তারপর থেকে আতঙ্কিত। তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।” |