উত্তরবঙ্গ উৎসবের জন্য অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি থেকে মাইক সরবরাহ সবই বাইরের ব্যবসায়ীদের দিয়ে করানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হলেন ফালাকাটার ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ডেকরেটরদের বঞ্চিত করে ওই কাজ করা হলে তাতে বাধা দেওয়া হবে বলে রীতিমত হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় ডেকরেটর ও মাইক ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উৎসব কমিটির ফালাকাটার চেয়ারম্যান অনিল অধিকারী-সহ বিভিন্ন স্তরে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে পুরো ঘটনাটি মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিধায়ক অনিলবাবু। তিনি বলেন, “ডেকরেশন এবং মাইক সরবরাহের জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল। শিলিগুড়ির যাঁরা কাজ পেয়েছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা শীঘ্রই ফালাকাটার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন।” এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ক্যাবিনেট বৈঠকে আছি। এখন কথা বলা সম্ভব নয়।” তবে ওই সমস্ত কাজ নিয়ে কোনও টেন্ডার হয়েছে কি না তা জানা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন ফালাকাটা ব্লক তৃণমূল নেতা তথা ডেকরেটর অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বাদল দাস। তিনি বলেন, “উৎসবের ওই কাজ নিয়ে টেন্ডারের কোনও বিজ্ঞপ্তি আমরা জানতে পারিনি। ফালাকাটায় ১৭৯ জন ডেকরেটর আছেন। তাঁদের বাদ দিয়ে কোনওভাবে বাইরের ডেকরেটরদের কাজ করতে দেব না। প্রশাসন আমাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিলে ফালাকাটার সমস্ত সামাজিক অনুষ্ঠান বয়কট করা হবে।” ডেকরেটরেরা জানাচ্ছেন, এর আগে তিস্তা গঙ্গা উৎসব থেকে রাজ্য ভাওয়াইয়ার উৎসব মত অনুষ্ঠান ফালাকাটায় হয়েছে। সে সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করা হয়নি। নতুন সরকার, মন্ত্রী, বিধায়কেরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করছেন। উৎসবের বিষয়ে তাঁর বিশেষ কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন সিপিএম পরিচালিত ফালাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ক্ষিতীশ রায়। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গ উৎসব হবে বলে একবার সভা ডেকে আমাকে সাধারণ সদস্য পদে রাখা হয়। এর পর ওই কমিটির কেউ কোনও যোগাযোগ করেনি। কি ভাবে অনুষ্ঠান হবে তা কিছু জানি না। শুনেছি শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীদের দিয়ে মাইক ও ডেকরেশন করানো হবে। আগে ফালাকাটায় বড় অনুষ্ঠানগুলিতে স্থানীয়দের কাজ দেওয়া হত।” আগামী ১১ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ফালাকাটা টাউন ক্লাব মাঠে উত্তরবঙ্গ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ফালাকাটা-সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় ওই অনুষ্ঠান হবে। উৎসবের জন্য ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে কমিটি গঠন হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শিল্পী আনার থেকে মঞ্চ, আলো দায়িত্ব তাদের হাতে থাকছে না। সমস্ত দায়িত্ব স্থানীয় কমিটির হাতে না রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে করা হচ্ছে। তাহলে কমিটির গুরুত্ব কী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন কমিটির সদস্যরা। শাসক দল তৃণমূলের একাংশ নেতাও এই ধরণের সিদ্ধান্ত মানতে পারছে না বলে দলের অন্দরে জানিয়েছেন। |