মহিলাদের জন্য সরকারি হোম তৈরির ব্যাপারে দার্জিলিং জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের কাছে প্রস্তাব চাইলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। শুক্রবার শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে দার্জিলিং জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ওই নির্দেশ দেন। সাবিত্রী দেবী বলেন, “শিলিগুড়িতে মহিলাদের জন্য একটি সরকারি হোম সত্যিই প্রয়োজন। জেলার আধিকারিকদের প্রস্তাব দিতে বলেছি। নিশ্চয়ই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” এদিন তিনি জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের আধিকারিকদের নিয়েও বৈঠক করেন। কোচবিহারের মহিলা হোমের প্রাপ্তবয়স্কা ৪৩ জন তরুণীকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরির ব্যাপারেও তিনি উদ্যোগী হবেন বলে কোচবিহারের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে আশ্বাস দেন। শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই নারীপাচার চক্র সক্রিয়। প্রায়ই পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলারা উদ্ধার হন। বৃহস্পতিবারই পুলিশ শিলিগুড়ির পতিতাপল্লি থেকে উদ্ধার হওয়া এক তরুণীকে আদালতে হাজির করে। আদালতের অনুমতি নিয়ে সরকারি হোম না-থাকায় ওই মহিলাকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসন থেকে এই ব্যাপারে বেশ কয়েকবার সমাজকল্যাণ দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হলেও জমি এবং অর্থের যুক্তি দেখিয়ে পূর্বতন বাম সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। এ দিনের বৈঠকে সাবিত্রী দেবী ঘটনাটি জানতে পেরে আধিকারিকদের ফের প্রস্তাব পাঠানো নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, দফতরের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যাপারে আধিকারিকদের প্রচারের নির্দেশও দেন। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, “দফতরের পক্ষ থেকে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপকের হার অত্যন্ত কম। অনেকেই বিষয়টি জানেন না। সেই জন্যই আধিকারিকদের বিষয়টি বলা হয়েছে। পাশাপাশি, চা বাগানে মাতৃত্ব যোজনা প্রকল্প নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য কেউ ভবন তৈরি করে দিলে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের কারও নামে উৎসর্গ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতর ‘সবলা’ নামে নতুন একটি প্রকল্প চালু করতে চলেছে। ওই প্রকল্পে ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরীদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট সরবরাহ করা হবে। সাবিত্রী দেবী জানান, উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও মালদহে প্রকল্পটি চালু হচ্ছে। প্রকল্পটি যাতে দার্জিলিং জেলায় চালু করা যায় সেই বিষয়েও তিনি উদ্যোগী হয়েছেন। পাশাপাশি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে তা বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলার আধিকারিকেরা বৈঠকে প্রস্তাব দেন, খিচুড়ি চালু করে তার চাল ও ডাল-সহ কাঁচামাল যাতে গ্রামীণ এলাকায় কৃষকদের কাছ থেকে কেনা যায় সেই ব্যবস্থা করার জন্য। কৃষকেরা যেমন চালের সরকারি দাম পাবেন তেমনই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের ভিড় বাড়বে বলেও তাঁরা বৈঠকে জানান। এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান জানান, বৈঠকে কোচবিহারে একটি সরকারি বৃদ্ধাশ্রম তৈরির প্রস্তাবও দেন তিনি। |