পাল্টা কটাক্ষ পার্থ-র
উৎসবে ‘রাজনীতি’র নালিশ অশোকের
রাজ্যের বিভিন্ন উৎসবের মঞ্চগুলিকে রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যবহার করছে, এই অভিযোগে সরব হলেন সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। শুক্রবার দুপুরে হিলকার্ট রোডে দলীয় দফতরে বসে প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ, “সরকারি টাকায় উৎসবের নামে রাজনৈতিক প্রচার হচ্ছে। এখনও যা দেখতে পারছি তাতে প্রতিটি মঞ্চটাই রাজনৈতিক মঞ্চ হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ সময় তাতে আইপিএস, আইএএস অফিসারদের বসানো হচ্ছে। মুখ্য সচিবককে দেখে তো সভার সভাপতি মনে হচ্ছে! উত্তরবঙ্গ উৎসবও তাই হবে।” আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ি থেকে শুরু হচ্ছে ‘উত্তরবঙ্গ উৎসব’। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর আয়োজিত উৎসবের সূচনা করতে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উপলক্ষ্যে রাস্তায় বাতিস্বম্ভ এবং বড় মাপের গেট বসানো হয়েছে। সাজানো ট্যাবলো দিনভর প্রচার চলছে। রাজ্যের এই প্রান্তের লোকসংস্কৃতি, সঙ্গীত-সহ নানা বিষয়কে উৎসবে তুলে আনায় উৎসবের লক্ষ বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। এতেই রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার কী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অশোকবাবু। তাঁর কথায়, “রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যা করছে। পরিবহণ শ্রমিকেরা ছাঁটাই হচ্ছে। তাঁরা বেতন, পেনশন পাচ্ছেন না। উত্তরবঙ্গে দুটি বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক মৃত্যু ঘটছে। রাস্তার সংস্কার বন্ধ হয়ে রয়েছে। হিমূল ধুঁকছে। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ হচ্ছে না। গরিব মানুষের ভাতা বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে উৎসবের যৌক্তিকতা বা প্রয়োজনীয়তা কী বুঝতে পারছি না।” পাশাপাশি, তথ্য সংস্কৃতি, যুব কল্যাণ দফতর না করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর উৎসবের মাধ্যমে কী ধরণের উন্নয়ন করতে চাইছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অশোকবাবু। এ দিন নিজের গবেষণার কাজে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকে বার হওয়ার পরে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শিল্পমন্ত্রী অশোকবাবুকে ‘সম্রাট’ বলে কটাক্ষ করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, “ওঁর সাম্রাজ্য আর নেই। মানুষ ওঁকে প্রত্যাখান করেছেন। ওঁরা রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেহাল করে দিয়ে গিয়েছেন। ২ লক্ষ কোটি টাকার দেনা রেখে গিয়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ উৎসবের সঙ্গে এখানকার মানুষের আবেগ রয়েছে। তা নিয়ে একটা আলাদা উন্মাদনা সৃষ্টি হচ্ছে।” পার্থবাবু বলেন, “কোটি কোটি টাকা দেনা মাথায় থাকা সত্ত্বেও অশোকবাবুরা সানিয়া মির্জা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়দের শিলিগুড়ি এনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক রয়েছে। আসলে অশোকবাবুরা হিংসা হচ্ছে। ওই ধরনের কথাবার্তা বলছেন।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ, “প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করে শহর জুড়ে নতুন বাতিস্তম্ভ বসানো হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের বিল ৩০ শতাংশ পুরসভার বাড়বে। হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর তৈরি করা হচ্ছে। ৪ কোটি টাকা দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইট বসছে। অ্যাক্সেল কারখানা, কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্র, সিকিমের রেলপথ-সহ রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের অবস্থা জানা যাচ্ছে না। শুধু মুখে আর কাগজপত্রে প্রকল্পের ঘোষণা হচ্ছে।” কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্তদের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে এই ধরণের কাজের উপকারীতা কী তা বোঝা যাচ্ছে না বলে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, শহরের বিভিন্ন বাতিস্তম্ভ, জল সরবরাহের পাম্প বাবদ বর্তমানে পুরসভার প্রায় ১৫ লক্ষ প্রতি মাসে খরচ হয়। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক হিসাবে এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ এই ধরণের কাজ করছে। চাষিদের দাবিদাওয়া নিয়ে সিপিআই-র জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী খড়িবাড়িতে আন্দোলন করছিলেন। রাস্তা অবরোধ হয়। পুলিশ মামলা করে দিয়েছে। অথচ ২৬ দিন রাস্তায় অনশন মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন, বিধানসভায় ভাঙচুর করা বামফ্রন্ট সরকার কোনও মামলা করেনি। এখন প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.