প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে সিপিএমের ‘কার্যালয়’। বন্ধ সেই ঘর খুলে মিলেছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এবং প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর ছবি।
অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার কর্ণসুবর্ণের সুকান্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় সরজমিনে ঘুরে দেখলেন মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সাগির হোসেন। যাঁর রাজনৈতিক পরিচয়, তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি। এবং স্ক্ুল থেকে বেরিয়েই তাঁর প্রতিক্রিয়া, “কয়েক বছর ধরে ওই স্কুলের এক তলায় চলছে সিপিএমের পার্টি অফিস। অথচ প্রধানশিক্ষক কোনও ব্যবস্থা নেননি।” এ ব্যাপারে দোষী প্রমাণিত হলে প্রধানশিক্ষক-সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ‘কড়া শাস্তি’র হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তিনি। আর এর জেরে স্কুলের ওই নতুন ভবনের নিচের সব ক’টি ঘরেই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কর্ণসুবর্নের ওই স্কুলভবনটি স্থানীয় পঞ্চায়েতের জমিতে। জেলা সিপিএমও সে কথা মেনে নিয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের আগেই পঞ্চায়েতের জমিতে ওই স্কুলভবনটি গড়া হয়েছিল। লাগোয়া জমিটিও পঞ্চায়েতের। সেখানে কিশোর বাহিনীর ছেলেমেয়েরা খেলাধূলা করে।” ‘মণিমেলা’ কিংবা ‘সব পেয়েছির আসর’-এর মতো কিশোর বাহিনীও একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। মোজাফ্ফরের বক্তব্য, “কিশোর বাহিনী নিছকই একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। স্কুল বাড়িটি হওয়ার পরে নিচেরতলার একটি ঘর ওই সংগঠনকেই দেওয়া হয়েছিল। স্কুলের অধিকাংশ ছেলে মেয়েই যার সদস্য। তাই খুদেদের একটি ঘর খুলে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের ভূত দেখছে তৃণমূল!”
সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সদস্য তথা জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রঘু নন্দীর বাড়ি ওই স্কুল লাগোয়া। তিনি বলেন, “স্কুলের একতলার একটি ঘর বহু দিন ধরেই কিশোর বাহিনী ব্যবহার করে আসছে। তবে সেখানে জ্যোতিবাবু বা সুভায়বাবুর এক-আধটা ছবি থাকা অস্বাভাবিক নয়। বিধান রায়ের থবি থাকলে দোষ নেই, অথচ জ্যোতিবাবুর ছবি থাকলেই দোষ। এই বৈষম্য কেন?” ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক বুদ্ধদেব ঘোষ বছর দেড়ের আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “২০০১ সালে ওই স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তখন ভবনটি ছিল একতলা। পরে দোতলা হলে ২০০৫ সালে পঠনপাঠন শুরু হয় দোতলায়। তখন থেকেই একতলার ঘরগুলিতে কিশোর বাহিনী, অঙ্গনওয়াড়ি, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী ও পঞ্চায়েতের কাজকর্ম করা হত। আমি ২০১০ সালের ১৬ জুলাই প্রধানশিক্ষক হিসাবে ওই স্কুলের কাজে যোগ দিয়ে স্কুলভবন ও জমির মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্বতন প্রধানশিক্ষক ওই বিষয়ে কোনও নথি, বা হদিশ আমাকে দিতে পারেননি।” |