শিক্ষকদের লাগাতার আন্দোলনে শুক্রবারও নদিয়ার মোহনপুর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন শুরু হল না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে এ দিন ক্লাসে গিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তাঁরা দেখেন, শিক্ষকদের অধিকাংশই আসেননি। ফলে ক্লাশ হয়নি এ দিনও।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন নির্বাচন নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগে কোনও ক্লাস হচ্ছে না। গবেষক পরিষদের সভাপতি সুমন সমাদ্দার বলেন, ‘‘এত দিন শুধু শিক্ষকরা ক্লাস নেওয়া বন্ধ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা গবেষণা ও পরীক্ষা নেওয়ার কাজও বন্ধ করে দিয়েছেন।” ফলে, চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন পড়ুয়া ও গবেষক সকলেই। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও এর সমাধান হয়নি।
বেশ কয়েক দফা দাবি নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন। অধ্যাপক সমিতির নিয়ম মেনে ডিন ও ডিরেক্টর অফ রিসার্চ নিয়োগ, সরকারি নিয়ম অনুসারে শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী নিয়োগ এবং তাদের পদোন্নতির সংক্রান্ত বেশ কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন ওই অধ্যাপক সমিতির সদস্যেরা। সংগঠনের সম্পাদক শ্রীকান্ত দাসের দাবি, ‘‘ডিন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপককে ওই পদে নিয়োগ করতে হবে। এই ছিল দাবি। ডিরেক্টর অফ রিসার্চ-এর ক্ষেত্রেও সিনিয়র কোনও বিজ্ঞানীকে নিয়োগ করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু উপাচার্য সেই দাবি না মেনে, তাঁর পছন্দ মতো প্রার্থীকে ওই পদে নিয়োগ করতে চাইছিলেন।’’ যার জেরে এই আন্দোলন। উপাচার্য সরোজকুমার সান্যাল অবশ্য বলেন, ‘‘যা হচ্ছে নিয়ম মেনেই হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। আশা করছি খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’ বিশ্বদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সমস্যা সমাধানে স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের রমেন বিশ্বাস, আচার্যের এক জন প্রতিনিধি এবং এক সিনিয়র অধ্যাপককে নিয়ে তিন জনের একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিকেই এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার ফ্যাকাল্টি ডিন এ. জামান বলেন, ‘‘আমি এ দিন পড়ুয়াদের ক্লাসে যেতে বলেছিলাম। সব ক্লাস না হলেও কয়েকটি ক্লাস হয়েছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দত্ত বলেন, ‘‘এ দিন ডিনের কথামত আমরা ক্লাসে গিয়েছিলাম। কিন্তু দুই-একটা ক্লাস ছাড়া আর কিছু হয়নি। এখন সেমিস্টার পদ্ধতিতে পঠন পাঠন চলে। শিক্ষকদের আন্দোলনের জেরে ছ’মাসের এই সেমিস্টারে আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি।’’ |