ব্যাহত হচ্ছে গ্রামোন্নয়ন-কাজ
বরাদ্দের মাত্র সিকিভাগ খরচ
রাজকোষে ঘাটতির জেরে উন্নয়ন-পরিকল্পনা নিয়ে যেখানে ফাঁপরে সরকার, সেই অবস্থায় গ্রামোন্নয়ন খাতে ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দের পঁচাত্তর শতাংশ টাকাই খরচ হয়নি পশ্চিম মেদিনীপুরে! জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বরাদ্দের মাত্র ২৩ শতাংশ অর্থ খরচ করা গিয়েছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বেশ কিছু সমস্যার জন্যই স্বাভাবিক গতিতে কাজ এগোয়নি। তবে এ বার জেলা পরিষদকে বিশেষ উদ্যোগী হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তের বক্তব্য, “অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা কোন খাতে খরচ হবে, তা ঠিক করে জেলা পরিষদ। প্রকল্পের কাজে গতি আনতে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যও বলেন, “সময়ের মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে, কাজ এগোতে কী কী সমস্যা হচ্ছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট খতিয়ে দেখব।”
পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত-স্তরে কাজের জন্যই ত্রয়োদশ কমিশনের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। রাস্তাঘাট, পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে গ্রামোন্নয়নের বিভিন্ন কাজকর্ম বরাদ্দকৃত অর্থে করা সম্ভব। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কমিশন থেকে জেলার পঞ্চায়েতগুলির জন্য চলতি আর্থিক বছরে বরাদ্দ হয়েছে ৩২ কোটি ৮৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৪১৭ টাকা। খরচ হয়েছে মাত্রই ৬ কোটি ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৩২৪ টাকা। পঞ্চায়েত সমিতিগুলির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭ কোটি ৬৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ৮৩ টাকা। খরচ হয়েছে মোটে ২ কোটি ১২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫৮২ টাকা! অর্থাৎ, মোট বরাদ্দ হয়েছে ৪০ কোটি ৪৮ লক্ষ ১৫ টাকা। আর খরচ হয়েছে মাত্র ৮ কোটি ১৭ লক্ষ ২১ হাজার ৯০৬ টাকা। পড়ে রয়েছে ৩২ কোটি ৩০ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫৯৪ টাকা! কেন এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পড়ে রয়েছে? জেলা প্রশাসন সূত্রের ব্যাখ্যা, এক সময়ে জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় পঞ্চায়েতগুলি কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। রাজনৈতিক কারণে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। ফলে, বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ এগোনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২৭টিই সিপিএমের নিয়ন্ত্রণে। অন্য দিকে, ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এক সময়ে ২২৩টিই সিপিএমের নিয়ন্ত্রণে ছিল (রাজ্যে পালাবদলের পর অবশ্য কয়েকটি পঞ্চায়েতেও ক্ষমতা-বদল হয়েছে)। রাজ্য ও জেলা-স্তরে দু’টি ভিন্ন দলের ‘ক্ষমতা’ কিছু সমস্যা তৈরি করেছে বলে মানছেন জেলাস্তরের একাধিক আধিকারিক। জেলা প্রশাসন সূত্রের আরও ব্যাখ্যা, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকায় কাজ হয়েছে, কিন্তু ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়েনি, এমন উদাহরণও রয়েছে। তবে শুধু ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দই নয়, গ্রামোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাই পড়ে থাকছে বলে অভিযোগ। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হচ্ছে না। বিষয়টি মেনে নিয়ে জঙ্গলমহল এলাকার এক বিডিও বলেন, “সার্বিক ভাবেই এখন বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজে গতি আসছে না। খরচের হার অত্যধিক কম বলেই বিষয়টি চোখে লাগছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.