সংগঠন-শক্তি দেখাল তৃণমূল
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সত্ত্বেও সফল সভা
‘শাসক’ হয়েও দ্বন্দ্ব কমেনি দলে। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে এমনকী ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে কেশপুরে। চন্দ্রকোনা, গড়বেতা-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বারেবারেই প্রকাশ্যে এসেছে শাসকদলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষ। এ সব সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরে ‘সফল সভা’ আত্মবিশ্বাস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বৃহস্পতিবারের সভার ‘সাফল্য’ ভোট-লড়াইয়ে এগিয়ে রাখবে দলকে--এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে শাসক-শিবির। সভার প্রধান বক্তা, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বিপুল জনসমাগমে উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রকাশ্যেই বলেছেন, “এখন তৃণমূল একটা সংগঠিত দল। সংগঠিত না হলে এত মানুষের জমায়েত সম্ভব হত না।” পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় সিপিএমের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও ঘোষণা করে গিয়েছেন মুকুলবাবু।
সভার ‘সাফল্য’ নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাস বাড়ার বড় কারণ এটাও যে, কোনও তারকা-আকর্ষণে এই সভার মাঠ ভরেনি। মকুলবাবু ছাড়া রাজ্যস্তরের কোনও নেতা আসেননি। সভার প্রস্ততিও নীরবে সেরেছেন জেলা নেতারাই। ব্লকে-ব্লকে গিয়ে সংগঠিত করেছেন স্থানীয় কর্মীবাহিনীকে। সেই সূত্রে অনেক জায়গায় দলের দ্বন্দ্ব নিরসনেও খানিক সাফল্য এসেছে। না হলে মেদিনীপুর শহরের সমাবেশে প্রত্যাশা ছাপানো ভিড় হত না। সিপিএমের বুধবারের সমাবেশকে জনসমাগমে ছাপিয়ে যাওয়ার যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন জেলা তৃমমূল নেতৃত্বতাতেও ষোলো-আনা সফল তাঁরা। মাত্রই গত ১৪ জানুয়ারি থেকে প্রস্তুতি নিয়ে সমাবেশের আয়োজনসেই চ্যালেঞ্জেও তাঁরা উতরে গিয়েছেন সসম্মানে।
একাংশ তৃণমূল নেতার দাবি, ছন্নছাড়া দশা কাটিয়ে দল যে সংগঠিত হওয়ার দিকে এগোচ্ছেবৃহস্পতিবারের সমাবেশ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, উপদলীয় কার্যকলাপে জড়িত কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে দল কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। সেটাও কোন্দল কমাতে সহায়ক হয়েছে। তাতে জনমানসে দলের ভাবমূর্তিই উজ্জ্বল হচ্ছে।
দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় কৃতিত্বের সিংহভাগ দিতে চান সাধারণ কর্মীদের। তিনি বলেন, “জেলা বা ব্লক নেতৃত্ব কেবল পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন। কাজ করেছেন অঞ্চল ও বুথস্তরের নেতাকর্মীরাই। সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরাই মিছিল, পথসভার পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমাবেশের কথা প্রচার করেছেন। এমনকী গাড়িতে যাঁরা সমাবেশে এসেছিলেন তাঁরাই গাড়ি ভাড়া করেছেন। সে জন্য অর্থ-সংগ্রহ করেছেন। জেলা থেকে আমরা গাড়ি ভাড়ার টাকা পর্যন্ত দিইনি।” তাঁর দাবি, “প্রত্যেককেই বলে দেওয়া হয়েছিল জোর করে চাঁদা নেওয়া যাবে না। কর্মী-সমর্থকেরা দলকে ভালবেসে যে ৫, ১০ টাকা দেবেন তা দিয়েই যা করার করতে হবে। অর্থ-সংগ্রহের পূর্ণাঙ্গ হিসাব রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মূলত, কর্মী-সমর্থকদের দলের প্রতি আনুগত্য ও জনসংযোগে গুরুত্ব দিতেই এই পদ্ধতি নেওয়া হয়।” ফলে, চাঁদার জুলুমের অভিযোগ ওঠেনি বলেই দাবি দীনেনবাবুর।
দাসপুরের বিধায়ক তথা দলের রাজ্য নেতা অজিত ভুঁইয়া বলেন, “ জেলায় দলের সব নেতাই এক যোগে কাজ করে সমাবেশের কথা প্রচার করেছেন। তাই এই সাফল্য।” একই মত জেলা যুব-সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীরও। এ ভাবেই রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই দল আরও সংগঠিত হবে বলে আশা তৃণমূল নেতৃত্বের। লক্ষ্য পরিষ্কার, পঞ্চায়েত-স্তরে টিকে থাকা বাম-ভিত্তি নড়বড়ে করে দেওয়া। তৃণমূল-স্তরেও পালাবদল ঘটানো।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.