|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
বনহুগলি |
কঠিন বসবাস |
দেবাশিস দাস |
এলাকার অধিকাংশ রাস্তারই বেহাল দশা। সুরাহা হয়নি পরিশোধিত পানীয় জল সংক্রান্ত সমস্যারও। নিকাশি ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল। যানবাহন বলতে গুটিকয়েক অটো এবং ভ্যানরিকশা। তাই রাজপুর-সোনারপুর এবং কলকাতা পুর এলাকার খুব কাছেই বনহুগলি অঞ্চলের নাগরিক পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
সোনারপুর গ্রামীণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত বনহুগলি অঞ্চলটি দু’টি পঞ্চায়েতে বিভক্ত। দুই পঞ্চায়েত এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার লোকের বসবাস। বাসিন্দাদের মতে, এখান থেকে গড়িয়া বাস ডিপো এবং মেট্রো স্টেশন যেতে পনেরো মিনিটও লাগে না। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় মূল একটি রাস্তা পাকা থাকলেও দুই পঞ্চায়েতের অধিকাংশ রাস্তাই দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ফলে, এক পশলা বৃষ্টি হলেই এই সব রাস্তায় যাতায়াত দুষ্কর হয়ে ওঠে।
|
|
স্থানীয় সূত্রে খবর, বোড়াল এবং গড়িয়া এলাকার নিকাশির জল এই এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়ে কাছেই হোগলকুড়িয়া খালে পড়ে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, বনহুগলি এক ও দুই নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় আজও কোনও উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।
তাঁদের কথায়: অধিকাংশ এলাকাতেই জল নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা নেই। যে কয়েকটি এলাকায় নর্দমা রয়েছে, তা থেকে বর্জ্য সরে না। ফলে বর্ষাকালে এলাকার অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া, এখনও এই এলাকায় পরিশোধিত পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি বলে বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য: আর্সেনিক কবলিত এলাকা হলেও এলাকার পানীয় জলের বিষয়টি এখনও টিউবওয়েলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময় টিউবওয়েলগুলি খারাপ হয়ে থাকায় জলকষ্ট লেগেই থাকে।
বনহুগলি এক নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের রোশনারা মণ্ডল বলেন, “পঞ্চায়েতের ক্ষমতা সীমিত। তাই সরকারি প্রকল্পের টাকা যে ভাবে আসবে এলাকার উন্নয়নের কাজে সে ভাবেই ব্যয় করা হবে।” বনহুগলি দুই নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের প্রভাস খেড়ুয়া এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “মূল খাল সংস্কার না হলে এবং রাস্তার উন্নতি করা না গেলে এখানকার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
|
|
পাশাপাশি ক্ষোভ রয়েছে পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দা আখতার সর্দারের কথায়: “কয়েক বছর আগেও এই এলাকার মানুষ জয়েনপুর-অরবিন্দ সেতু রুটের মিনিবাসের উপরে নির্ভর করতেন।
কিন্তু আচমকাই এই রুটের বাস কমে যায়। এখন দিনে একটি কি দু’টি বাস চলে।
আবার কখনও তা-ও চলে না। ফলে অটো বাভ্যানরিকশা ছাড়া যাতায়াতের অন্য উপায় নেই।”
এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা কৃষিজীবী হওয়ায় সেচ ব্যবস্থা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার সেচ ব্যবস্থা যে খালগুলির উপরে নির্ভরশীল, দীর্ঘ দিন সেগুলির কোনও সংস্কার হয়নি। তাই সেচের কাজের সময়ে জল নিয়েও বিস্তর সমস্যা হয়। ক্ষোভ রয়েছে গ্রামের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা নিয়েও। গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছলেও সন্ধে নামলেই এলাকার অধিকাংশ রাস্তাই অন্ধকার থাকে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
|
|
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সিপিএমের সিরাজ খাঁ বলেন, “যে কাজ আমরা শুরু করেছিলাম বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতি সেই কাজগুলো শেষ করলেই এলাকার পরিকাঠামোগত চিত্রটা বদলে যাবে। কিন্তু বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।” সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, “স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি লিখিত ভাবে নির্দিষ্ট করে এলাকার সমস্যার কথাগুলি জানালে পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে আমরা তা জেলা পরিষদকে জানিয়ে দেব।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|