|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
শিশুকল্যাণ |
উত্তরণের পঞ্চাশ |
পাপিয়া মিত্র |
হোম থেকে প্রাথমিক স্কুল, প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক। সেই উত্তরণেরও পেরিয়ে গেল পঞ্চাশ। চিলড্রেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন হাইস্কুল ফর গার্লসের সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপ্তি অনুষ্ঠান পালিত হল নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে।
জ্যোতির্ময়ী গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁরই অণুপ্রেরণায় উপার্জনের পথ দেখাতে প্রতিমা রায়, অশোকা গুপ্ত, ফুলরেণু গুহ, প্রীতি সেন এবং দীপ্তি চট্টোপাধ্যায় উদ্বাস্তু মায়েদের নিয়ে একটি দল গড়েন। মিলিটারিদের খাবার তৈরি করতেন সেই মায়েরা। এক দিন এক মা জানান, তাঁর মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই থেকে মেয়েদের নিরাপদে রাখার উদ্যোগ শুরু হল। ১৯৫২-এ বেলেঘাটায় ‘জ্যোতির্ময়ী সেবাভবন’ গড়ে উঠল কয়েকটি অনাথ শিশুকে নিয়ে। সেই সেবাভবনই পরে হয়ে ওঠে চিলড্রেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বা শিশুকল্যাণ পরিষদ।
|
|
পরিষদ গড়ে ওঠার গল্প শোনাচ্ছিলেন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা উৎপলা মুখোপাধ্যায়। বললেন, “সে দিনের হোম না থাকলে আজকের এই বিদ্যালয়কে কেউই চিনতেন না। এক বছর আগে প্রভাতফেরির মধ্যে দিয়ে সূচনা হয়েছিল সুবর্ণজয়ন্তীর। এ বছর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে নানা আয়োজনে অতিথিদের দেওয়া ফুলের স্তবক থেকে আমন্ত্রণের চিঠি সবটাই করেছে হোমের ও বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন আমার সহকর্মীরা।”
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণা চৌধুরী জানালেন, ১৯৫৮-য় সরশুনার ১ রাখাল মুখার্জি রোডে বর্তমান ঠিকানায় গড়ে ওঠে পরিষদের নতুন ভবন। ১৯৬১-তে তৈরি হল পরিষদের হাইস্কুল ফর গার্লস। ১৯৬৭-তে হাইস্কুলটি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদন পেল। ২০০০-এ উচ্চমাধ্যমিক হল। এখন সব বিভাগ মিলিয়ে ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ন’শো।
|
|
কিন্তু বর্তমান ঠিকানায় বিদ্যালয়ের শুরুটা কেমন ছিল? ৪/৫টি ঘর আর জনা বারো ছাত্রী নিয়ে শুরু হল পথ চলা। ১৯৬১-তে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি খোলা হল। ছাত্রী সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৮। ৪ জন শিক্ষিকা, অঙ্কনশিক্ষক ও বিদ্যালয় দেখভালের জন্য একজন কর্মীও নিযুক্ত হল। ১৯৬৯-এ ২৭ জন ছাত্রী প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসে। ২২ জন উত্তীর্ণ হয়। এই সময় থেকে স্থানীয় মানুষের চোখ পড়ল প্রতিষ্ঠানের দিকে। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেল ও বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোরও পরিবর্তন হতে লাগল। স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সম্পাদক সমর রায়চৌধুরীর পরিবার তাঁর সঞ্চিত অর্থ বিদ্যালয়কে দান করেন। সেই অর্থে তাঁর ইচ্ছানুয়াযী বিদ্যালয়ে একটি গ্রন্থাগারও খোলা হয়। |
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|