|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত |
শুধুই জট |
হ য ব র ল |
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
রাস্তায় দুরন্ত গতিতে চলছে ভ্যান, অটো এবং মোটরসাইকেল। রাস্তায় বাড়ছে ভ্যানের সংখ্যাও। এ দিকে, ফুটপাথ জুড়ে গ্যারাজ এবং দোকান-বাজারের দখলদারি। এর জেরে রোজ যানজট হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফুটপাথের দখলদারি এবং তার ফলে যানজট রুখতে ব্যর্থ মধ্যমগ্রাম পুরসভা।
মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে শুরু হয়ে সোদপুরে বিটি রোডে মিশেছে মধ্যমগ্রাম পুরসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সোদপুর রোড। এই পথে খুব অল্প সময়েই সোদপুর, দক্ষিণেশ্বরে যাতায়াত করা যায়। অথচ, সে রাস্তাই যানজটে কার্যত অগম্য হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের।
মধ্যমগ্রাম চৌমাথা থেকে উড়ালপুলে ওঠার মুখ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার ফুটপাথ জুড়ে রয়েছে দোকান-বাজার, হোটেল এবং ভ্যান-অটোর স্ট্যান্ড। জবরদখলের সবচেয়ে করুণ ছবি বসুনগর, দেবীগড়, বিজয়নগর ও বঙ্কিমপল্লি এলাকায়। এখানে রোজ সকালে ফুটপাথ জুড়ে বসে সব্জির দোকান। রাস্তায় দাঁড়িয়েই চলে কেনা-বেচা। |
|
এ ছাড়া, ফুটপাথ দখল করে থাকে একাধিক গাড়ি। যদিও সব্জি-ব্যবসায়ী মহম্মদ কবীর বলেন, “পুরসভা ফুটপাথে বসা নিয়ে কিছু বলেনি।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে চলাচল করে ভ্যানরিকশা, অটো, মোটরসাইকেল। ফলে রীতিমতো প্রাণ হাতে করে চলাচল করতে হয় পথচারীদের। দীর্ঘ ডিভাইডারের মাঝের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ভ্যান, মোটরসাইকেল রাস্তা পারাপার করে। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে।
বেআইনি দখলদার সরানোয় মধ্যমগ্রাম পুরসভা কার্যত ব্যর্থ বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের। অভিযোগ উঠেছে, এলাকার কিছু ব্যবসায়ী প্রচুর ভ্যান কিনে বৈধ অনুমতি ছাড়াই ভাড়া খাটিয়ে ব্যবসা করছেন। হাবড়া, বামনগাছি, দত্তপুকুর, কদম্বগাছি, বিলকান্দা, কীর্তিপুর, শাসন প্রভৃতি এলাকার দরিদ্র বাসিন্দারা মধ্যমগ্রামে এসে ভ্যান চালাচ্ছেন। রাস্তায় প্রচুর ভ্যান চলাচল করলেও খাতায়-কলমে তার কোনও হিসেব নেই পুরসভার কাছে। ভ্যানচালকদের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এ রাস্তায় হাজারখানেক ভ্যান চলাচল করে। পুরসভা দিনের বিভিন্ন সময়ে ভ্যান চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করলেও বিধি ভাঙার দৃষ্টান্তমূলক কোনও সাজা না থাকায় তা কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। নিত্যযাত্রী দিলীপ সর্দারের কথায়: “এ রাস্তায় চলাচলে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েন মহিলা এবং পড়ুয়ারা। সোদপুর রোডে তো রীতিমতো সাবধানে চলাচল করতে হয়। পুরসভা যদি এখন থেকেই ফুটপাথ বাঁচাতে সচেষ্ট না হয় তা হলে সোদপুর রোড খুব তাড়াতাড়ি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠবে।” |
|
মধ্যমগ্রাম প্রাইভেট কার ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “৩৫ বছর ধরে এই ফুটপাথে গাড়ি রাখছি। কেউ কখনও উঠে যেতে বলেনি। তবে আমরা ফুটপাথে কিছুটা জায়গা ছেড়ে গাড়ি রাখি। প্রশাসন ও পথচারীদের সঙ্গেও সহযোগিতা করি।” তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মধ্যমগ্রাম অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক কুমারেশ চক্রবর্তী বলেন, “পাঁচটি রুটের অটো এখান থেকে ছাড়ে। ফুটপাথ ছাড়া তো অটো রাখার কোনও জায়গা নেই।”
মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ও বিধায়ক তৃণমূলের রথীন ঘোষ বলেন, “আমরা ট্রাফিক পুলিশ ও জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে একটি যৌথ সমীক্ষা করেছি। ট্যাক্সি, অটো, ভ্যান ও রিকশাস্ট্যান্ডগুলি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফুটপাথ দখল করে বসা সব্জি বিক্রেতাদের সরে যেতে বলব।”
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|