এক দিকে আইপিএল নিলামের মঞ্চ। শনিবার যা হতে যাচ্ছে রাহুল দ্রাবিড়ের শহরে। আর রাতের দিকে বেঙ্গালুরুতে পা দেওয়ার পর থেকে মনে হচ্ছে, ০-৮ নামক কেলেঙ্কারি অন্য কোনও গ্রহে হয়ে থাকবে। এটা অন্য গ্রহ। আইপিএল গ্রহ। এখানে রবীন্দ্র জাডেজা কাল যত দামে বিক্রি হয়ে যেতে পারেন, সচিন, ব্র্যাডম্যান, দ্রাবিড়, লারা, জ্যাক হবস, ভিক্টর ট্রাম্পার এবং আরও অনেকের সমস্ত রকম ক্রিকেট মিলিয়েও অত রান নেই! তা সে যতই ক্রিকেট প্রবীণেরা বলুন-- কে রবীন্দ্র জাডেজা!
অন্য দিকে আইপিএলের মঞ্চ ঘিরে উত্তাল আবহাওয়া এসে পড়া। যেটা নিলামের দর হাঁকাহাঁকির মতো প্রকাশ্যে ঘটছে না। ঘটছে পর্দার আড়ালে। কিন্তু সাংঘাতিক আতঙ্কের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে আগামী দিনে। সাংঘাতিক আতঙ্কের এই কারণে, যেহেতু উপমহাদেশের ঐক্য পর্যন্ত চুরমার হতে চলেছে। নতুন এই সংঘাত বেধেছে ভারত বনাম বাংলাদেশের মধ্যে। এবং তার কেন্দ্রে রয়েছে বাংলা ক্রিকেট লিগ। আইপিএলের ঢঙেই যা এ বার শুরু করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট কর্তারা। ভারতের মতোই বিশাল টাকা দিয়ে যেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা দল কিনেছে। বিশাল টাকায় শাহিদ আফ্রিদি, ক্রিস গেইলের মতো তারকারা বিক্রি হয়েছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তারা খুব চেয়েছিলেন, এই টুর্নামেন্টের জন্য ভারত থেকে অন্তত জনা পাঁচেক ক্রিকেটারকে ছাড়া হোক। কিন্তু ভারতীয় বোর্ড অনুমতি তো দেয়ইনি, উল্টে অপেক্ষা করিয়ে রেখে রেখে উত্তর পর্যন্ত দেয়নি। বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তারা এতে প্রবল অপমানিত বোধ করেছেন।
শনিবার বেঙ্গালুরুর পাঁচ তারা হোটেলের নিলাম-কক্ষে সহারা পুণে ওয়ারিয়র্সের টেবিলে যিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে বসছেন, সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এর মধ্যে এসে পড়েছেন। একেবারে শেষ বেলায় সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিপিএল কর্তারা। ‘তোমাকে আমরা যে কোনও মূল্যে চাই’ বলে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সৌরভের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে বিপিএল কর্তারা ভেবেছিলেন, ‘দাদা’-কে আনতে পারলে আর কোনও ভারতীয় ক্রিকেটার না পেলেও চলবে। সৌরভ ভীষণ ভাবে চেয়েওছিলেন খেলতে। অনুমতি চেয়ে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেন। আশ্চর্যের হচ্ছে, অবসর নিয়ে ফেলা সৌরভকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ওয়াকিবহাল মহলে অনেকে মনে করছেন, ভারতীয় বোর্ড কর্তারা ভয় পাচ্ছেন আইপিএলের মতো একই রকম সফল কোনও টুর্নামেন্ট অন্য দেশে হলে আইপিএলের জৌলুস কমে যাবে। তাই তাঁরা প্লেয়ার ছাড়তে চাইছেন না। সৌরভকে প্লেয়ার হিসেবে না পেয়ে এখন বিপিএল কর্তারা চেষ্টা করছেন যদি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও অন্তত পাওয়া যায়। শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্কহানি আগেই ঘটেছে। এ বার বাংলাদেশও বিক্ষুব্ধের তালিকায় চলে গেল। যেখানে আর ক’দিন পরেই এশিয়া কাপ খেলতে যেতে হবে ধোনির টিমকে। দারুণ কিছু আতিথেয়তা পাওয়ার আশা না করাই ভাল। অনেকের এও মনে হচ্ছে, বেঙ্গালুরুর নিলাম নিয়ে ভারতীয় বোর্ড কর্তাদের যা আগ্রহ, তার চেয়ে অনেক বেশি কৌতূহল নিয়ে তাঁরা দেখতে বসবেন ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু বিপিএল। বিশেষ করে ইএসপিএন-স্টার স্পোর্টস সব ম্যাচ সরাসরি সম্প্রসারণের স্বত্ব কিনে নেওয়ায় ভারতীয় বোর্ড কর্তারা নড়েচড়ে উঠেছেন। সোনার রাজহাঁস কি তা হলে ও দিকেও ডিম পাড়বে? |