বন্ধুকে পেয়ে তেতে উঠলেন টোলগে
কটার পর একটা শট মেরেই চলেছেন গোলে। টোলগে ওজবেকে শু্যটিং প্র্যাক্টিস করাতে গোলপোস্টের নীচে কখনও রবিন সিংহ, কখনও সুবোধ কুমার। চলছে উদ্দাম হাসি-ঠাট্টা।
উল্টো দিকের পোস্টের ছবিটাও প্রায় এক। উগা ওপারা এবং হরমনজিৎ সিংহ খাবরাকে নিয়ে গোলের ঠিকানা খুঁজতে ব্যস্ত পেন। গোল হলে ওপারার কান ফাটানো চিৎকার। গোল না হলে পেনের মাথায় সজোরে চাটি।
শুক্রবার সকালে ইস্টবেঙ্গল মাঠের সর্বত্রে যেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফুরফুরে আবহাওয়ার আমেজ! যেখানে গা ভাসাতে দ্বিধা করলেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানও। ওপারা-পেন-টোলগেদের সঙ্গে সমান তালে সারাক্ষণ খুনসুটি করে গেলেন। আবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টিম বানিয়ে ম্যাচও খেললেন। হঠাৎ দেখলে মনেই হবে না, আর মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা পরে মর্যাদা-রক্ষার ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামবে লাল-হলুদ ব্রিগেড।
শনিবার মুখ-রক্ষার ম্যাচে পেন, টোলগে এবং ওপারার ওপর বাড়তি দায়িত্ব দিচ্ছেন মর্গ্যান। প্রয়াগ ইউনাইটেড ম্যাচে গুরপ্রীত সিংহের অবিশ্বাস্য গোল হজম মাথায় রেখেই ওপারাকে গোলের সামনে আরও তৎপর থাকতে বলেছেন কোচ। অর্থাৎ শুধু বল সাপ্লাই দিলেই চলবে না, গোলকিপারকেও নির্ভরতা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করবেন এই নাইজিরিয়ান স্টপার। মর্গ্যান সরাসরি স্বীকার করলেন, “এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট বেশি জরুরি।” তাঁর মন্তব্য, “ডেম্পোর সঙ্গে ছয় পয়েন্টের ফারাক। এই ম্যাচ হারলে নয় পয়েন্ট হয়ে যাবে। তখন লিগে ফেরার সুযোগ থাকবে না।”
গুরপ্রীতের রক্ষাকবচ ওপারা হলে গোলের সন্ধান দিতে দলের ভরসা টোলগে-রবিন। পুরনো বন্ধুকে পাশে নিয়ে শনিবার যুবভারতীতে লাল-হলুদ মশাল জ্বালাতে মরিয়া টোলগে। মুখে কিছু না বললেও, শরীরি ভাষাতেই ভেসে উঠছিল ভিতরের জেদটা।
আর পেন? যাঁকে কেন্দ্র করেই শনিবারের ম্যাচের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছে মোহনবাগান। শুক্রবারও সুব্রত ভট্টাচার্যের মুখে বারবার উঠে এল পেনের নাম, “এই মুহূর্তে দেশের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হল পেন।” লাল-হলুদ কোচ অবশ্য ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চাইছেন না। উল্টে পেনের শিকল খুলতে ৪-৩-১-২ ছক বদলে ৪-৪-২ ছকে খেলতে চাইছেন মর্গ্যান। যাতে অনেকক্ষণ বল ধরে খেলতে পারেন পেন। বিপক্ষের পায়ের জঙ্গল থেকে মুক্তি দিতে উইথড্রন ফরোয়ার্ডের জায়গায় সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে নেমে আসছেন নাইজিরিয়ান মিডিও।
ইস্টবেঙ্গলের বহিরঙ্গে ‘ডোন্ট কেয়ার’-এর ‘সাইন বোর্ড’ ঝুলে থাকলেও, অন্দরমহলের দৃশ্যমালা থেকে কিন্তু অন্য তথ্যচিত্রই বেরিয়ে আসছে। দশ হাজার টাকা জরিমানার ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ বিদেশি ফুটবলাররা। ক্যামেরা দেখলেই পালাই পালাই ভাব সঞ্জু-মেহতাবদের। প্রশ্ন করা তো দূরের কথা, মুখ থেকে টুঁ শব্দ বের করার আগেই সবাই হাতের পাঁচটা আঙুল দেখিয়ে বলে দিচ্ছেন, “দাদা, আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। যা বলার কোচ বলবেন।” তবে মরসুমের শেষ বড় ম্যাচে খেলতে নামার এক দিন আগে আড়ালে বেশ কয়েক জন ফুটবলার স্বীকার করলেন, “প্রচণ্ড চাপে আছি আমরা। একে তো আই লিগে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচটা জিততেই হবে। তার ওপর আবার ডার্বি। মোহনবাগানকে হারাতে না পারলে, মুখ দেখাতে পারব না।” দুপুর একটা নাগাদ বেরোনোর সময় দেখা গেল, টোলগে-পেন-রবিনরা হাসি-ঠাট্টার খোলস ছেড়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ক্লাব তাঁবুর সামনে লাল-হলুদ জনতার অনবরত জয়ধ্বনিও তাঁদের মৌনব্রত ভাঙতে পারল না। থমথমে মুখ নিয়ে একে একে নিজের গাড়িতে চেপে নিঃশব্দে বেরিয়ে গেলেন ফুটবলাররা। ০-২ বোঝার চাপে কতটা কাহিল ফুটবলাররা, সেটা বুঝতে বেশি মাথা ঘামাতে হল না। গাড়িতে ওঠার আগে এক অটোগ্রাফ শিকারীকে ওপারা শুধু বলে গেলেন, “আজ তোলা থাক। জিতেই অটোগ্রাফ দেব।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.