আমতার গ্রামে দেড় মাসেও মিলল না মজুরি
সংসারে অনটন, শ্রমিক অসন্তোষ বেড়েই চলেছে বহু এলাকায়
কশো দিনের কাজের প্রকল্পে সময়মতো মজুরি পাচ্ছেন না জবকার্ডধারীরা। হাওড়ার আমতা ১ ব্লকের উদং ১ এবং খড়দহের ঘটনা। এর জন্য দু’টি পঞ্চায়েতের কর্তারা এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন।
এই পঞ্চায়েতেই একশো দিনের কাজের প্রকল্প চলছে। রাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে নিচু এলাকা বোজানো, পুকুর কাটানো, রাস্তার উপরে ইটপাতা প্রভৃতি কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফর করে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্প যাতে গতি পায়। মাস তিনেক ধরে জোরদার কাজ শুরু হয়েছে এই দু’টি পঞ্চায়েতে। কিন্তু মজুরি দেওয়ার সমস্যা তৈরি হওয়ায় জবকার্ডধারীরা প্রকল্পটিতে উৎসাহ হারাচ্ছেন বলে এই দু’টি পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে।
খড়দহ গ্রামে এসে দেখা গেল, রাস্তার কাজ চলছে। পুরনো ইট তুলে ফেলে এক দিকে যেমন চলছে নতুন ইট পাতার কাজ। অন্য দিকে, পুকুর থেকে মাটি কেটে তা ফেলা হচ্ছে রাস্তার দু’ধারে। গত এক মাস ধরে কাজ করছেন শেখ সামসুদ্দিনের মতো জনা পঁয়ত্রিশ জবকার্ডধারী। সামসুদ্দিন বলেন, “গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে টানা কাজ করছি। একটি পয়সাও পাইনি। পঞ্চায়েতে গেলে বলা হচ্ছে, টাকা ব্যাঙ্কে চলে গিয়েছে। ব্যাঙ্কে গেলে বলা হচ্ছে, টাকা এসেছে। পেতে দেরি হবে।” সুপারভাইজার শেখ নাসির আলির কথায়, “কাজ শেষ হওয়ার পরে প্রতি ছ’দিন অন্তর মজুরি হিসাব করে পঞ্চায়েতের চিঠি-সহ ব্যাঙ্কে জমা দিচ্ছি। সেই মজুরি পেতে এক মাসের উপরে লেগে যাচ্ছে।”
তৃণমূল অধ্যুষিত এই পঞ্চায়েতের শিল্প ও বাণিজ্য পরিকাঠামো-সংক্রান্ত সঞ্চালক শেখ সরাবুদ্দিন বলেন, “মোট পাঁচটি বিভিন্ন প্রকল্পে বর্তমানে এক মাসের উপরে একশো দিনের কাজ চলছে। কিন্তু টাকা পেতে যদি এত দেরি হয়, তা-হলে তো জবকার্ডধারীরা নিরুৎসাহ হয়ে পড়বেন। বাস্তবে, অনেকে কাজ করতে চাইছেন না।”
উদং ১ পঞ্চায়েতটিও তৃণমূল অধ্যুষিত। প্রধান রমজান মল্লিক স্বীকার করেন, মজুরদের টাকা পেতে বেশ দেরি হচ্ছে। এই পঞ্চায়েতের কাজেও বেশ গতি এসেছে। চলতি আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত খরচ প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা। সমস্যা হল জবকার্ডধারীরা সময়মতো মজুরি পাচ্ছেন না। দু’টি পঞ্চায়েতেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক-এর ফতেপুর শাখায়। ম্যানেজার দিলীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই। একশো দিনের প্রকল্প-সহ দু’টি পঞ্চায়েতের প্রতিটি প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট রয়েছে আমাদের ব্যাঙ্কে। শুধু একশো দিনের কাজের প্রকল্পেরই অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১৬০০।” তিনি আরও বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী, স্থানীয় ডাকঘরেও অর্ধেক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা। ওই দু’টি পঞ্চায়েতকে বার বার বলেও তারা সে কাজ করেনি।” সরাবুদ্দিন অবশ্য বলেন, “আমরা স্থানীয় ডাকঘরে প্রচুর অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছি। সেখানে টাকা পেতে দেরি হচ্ছে না।” উদং ১ পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, “আমাদের এলাকার ডাকঘর অ্যাকাউন্ট খুলতেই চাইছে না। ফলে সব অ্যাকাউন্ট ব্যাঙ্কে খুলতে হচ্ছে।” উদং ডাকঘর সূত্রের খবর, কর্মীর অভাবেই অ্যাকাউন্ট খোলার চাপ তারা নিতে পারছে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.