বইমেলার বিকিকিনিতে কেউ কারও থেকে কম যায় না। বইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিকোচ্ছে বিরিয়ানি।
সবচেয়ে বেশি ভিড় অবশ্য খাওয়ার জায়গায়। সে ‘ফুড কোর্ট’ই হোক কিংবা মেলার ভিতরে খাওয়ার কিয়স্কে। তবে সবাই এক কথায় স্বীকার করেছে, এ বারের বইমেলায় বইয়ের পরে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে তা হল বিরিয়ানি। গোটা মেলা জুড়ে বিরিয়ানির গন্ধ ম ম করছে। মেলার মধ্যে কোথাও থিকথিকে ভিড়ে উঁকি দিলেই চোখে পড়বে কেউ না কেউ থার্মোকলের থালায় স্তূপাকার বিরিয়ানি নিয়ে ভিড়ের গুঁতো সামলে দিব্যি
খেয়ে চলেছেন।
মেলার মধ্যে বইপ্রেমীদের ভিড় সর্বদা চলমান। কিন্তু খাদ্যরসিকদের ভিড় সব সময়েই স্থির। ফলে সেই ভিড় অনেক জায়গায় রাস্তা পর্যন্ত আটকে রেখেছে। সামান্য হলেও অসুবিধায় পড়ছেন বইপ্রেমীরা। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের যুগ্ম সম্পাদক সুধাংশু দে বললেন, “খাবার কিয়স্কগুলো মিলন মেলায় স্থায়ী ব্যবস্থা। বদলাতে তো পারব না। তবে দেখব যাতে পরের বার অসুবিধে না হয়।”
মেলার এক পাশে ফুড কোর্টে মিলছে চাউমিন, কাবাব, মোমো, ফুচকা, দইবড়া, পিঠেপুলি, পাটিসাপ্টা থেকে মহারাজভোগও। আন্তর্জাতিক বইমেলায় এ বারের সংযোজন বহুজাতিক সংস্থার কফিশপ। |
পিংলার পটশিল্পীরা মেলার উত্তর দিকে অনেকটা জায়গা জুড়ে হাজির। তাঁদের আঁকা পট আর টি শার্টেরও কাটতি আছে মেলায়। পটের গানও গেয়ে শোনাচ্ছেন। ওই চত্বরে হাতে আঁকা নিসর্গ চিত্র, মাটি আর কাগজের গয়না, সেলাই বা আলপনা শেখার সরঞ্জাম। সব সময়েই ভিড় মুখ আঁকার শিল্পীদের সামনে। চালের দানার উপর নাম লিখিয়ে নেওয়ার ভিড়ও কম নয়। গিল্ড এবং পুলিশের সতর্কতা সত্ত্বেও মেলার মধ্যে এ দিন ছোট্ট মিছিল করে ফেলল বন্দিমুক্তি কমিটি। তাদের দাবি ছিল: রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার। গিল্ডের মুখপত্র ‘পুস্তকমেলা’ বেরিয়েছে। সেখানে মন্বন্তর, দাঙ্গা আর স্বাধীনতা নিয়ে নতুন-পুরনো অনেক লেখার সঙ্গে বীরেন্দ্রনাথ সিংহের তোলা সেই সময়ের বহু ছবি। অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপাত-ভিন্ন তিনটি উপন্যাস নিয়ে ‘হাংরি’ প্রকাশিত হল মেলায়। বেরোলো সমরেন্দ্র দাসের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘সম্মোহন পাঠের পেছনে’, কাবেরী রায়চৌধুরীর গল্পগ্রন্থ ‘এক ডজন গল্প’, কুণাল ভট্টাচার্যের কবিতার বই ‘তন্দ্রামৌন ফেসবুক’, দিবাকর ভট্টাচার্যের গল্পগ্রন্থ ‘চরাচর সারে’। বেরিয়েছে দিলীপ চট্টোপাধ্যায় অনুদিত হুয়া শানের লেখা কিশোরপাঠ্য চিনা গল্প ‘রাখাল ছেলে হাইওয়া’, সুজাতা মুখোপাধ্যায়ের পকেটে চিকিৎসা সিরিজের দ্বিতীয় বই ‘এবার সুন্দর হবো’। এ দিনই বেরোলো চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার বই ‘কালো বসন্তের কিস্সা’। |