নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এ যেন ম্যারাথন দৌড়! দুলকি চালে শুরু করেও শেষ ল্যাপের আগে হঠাৎই দুদ্দাড় ভঙ্গিতে সবার আগে সিমলেপাড়ার নকুড়। ‘নিরাপদ’ দূরত্বে এগিয়ে থাকা গাঙ্গুরামকে হতবাক করেই পিছনে ফেলে দিয়ে। দক্ষিণের মিষ্টি-তারকা গুপ্তা ব্রাদার্স বা হিন্দুস্থান সুইটসও দৌড়ে এতটা সামনে চলে আসবে, তা এতদিন অভাবনীয় মনে হচ্ছিল। ভবানীপুরের বলরাম ময়রা বা উত্তরের হেভিওয়েট ভীম নাগকে কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে তারা।
|
ক্যাডবেরি মিষ্টি চেখে দেখছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সন্দীপ রায়
ও রাখীপূর্ণিমা দাশগুপ্ত। শুক্রবার। ছবি: প্রদীপ আদক |
‘ক্যাডবেরি-মিষ্টি সেরা সৃষ্টি’-র ভোটযুদ্ধের চতুর্থ সপ্তাহে শহরের মিষ্টি-হেভিওয়েটদের টক্করে দেখা যাচ্ছে এমনই চমকপ্রদ উত্থান-পতন। আর এই কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহেই শুক্রবার নতুন মিষ্টি চাখলেন প্রতিযোগিতার তিন বিচারক। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, চিত্রপরিচালক সন্দীপ রায় ও রন্ধনপটিয়সী রাখীপূর্ণিমা দাশগুপ্ত- তিন জনই নতুন মিষ্টির স্বাদে আপ্লুত। মিষ্টি-ভোটের উত্তেজনার পারদ চড়ছে শহরের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও। কলেজ-পড়ুয়ারাও নিজের পাড়ার স্টার-ময়রাকে জেতাতে চাঙ্গা। মিষ্টি-যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকের ওয়ালে। ময়রারা কোমর বেঁধে আলাদা ‘পেজ’ তৈরি করে ফলাও করে নিজেদের নতুন সৃষ্টির প্রচারে পঞ্চমুখ।
লড়াইয়ের প্রথম পর্যায়ে গাঙ্গুরামকে সবার ধরা-ছোঁয়ার বাইরে মনে হচ্ছিল। রান চেজ করতে নেমে ৪ কি ৫ নম্বরে পড়ে থাকা নকুড়ের সামনে তখন কঠিন ‘আস্কিং-রেট’। কিন্তু ‘বিশ্বস্ত’ ভোটারদের ঘন ঘন ‘এসএমএস’ পাঠাতেই ছবিটা পাল্টেছে। গণ-এসএমএসের স্ট্র্যাটেজিতে ভরসা রেখেছে গুপ্তা ব্রাদার্সও। তবে গাঙ্গুরামও হাল ছাড়ার পাত্র নয়। তারা বলছে, ম্যাচ এখনও শেষ হয়নি। এ যেন ফুটবলের আই লিগে ডেম্পো-মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল-চার্চিলদের আকচা-আকচি। উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা ভোটের সঙ্গে তুলনাতেও কলকাতার এই মিষ্টি-যুদ্ধের সমীকরণ কম জটিল নয়।
মর্যাদার ভোটে সেনমহাশয় ও কে সি দাশও লড়ছে মাথা উঁচু করেই। দু’দলেরই বক্তব্য, “আমাদের নতুন মিষ্টি সকলের ভাল লাগছে। এটাই সব থেকে বড় পুরস্কার।” ভোটের অঙ্কে পিছিয়ে থাকলেও মিষ্টির গৌরবে খাটো নয় যাদবচন্দ্র দাশও। যাদব-কর্তা সৌমেন দাশ গর্বিত: “আমাদের নতুন ক্যাডবেরি-মিষ্টি চকো বল এই বিয়ের মরসুমেও সুপার হিট। ভোটে যাই হোক, মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ায় আমরা কারও থেকে পিছিয়ে নেই।” |