বেহালই পড়ে পুরনোটি, নতুন শিল্পতালুকের ভাবনা নিয়ে ক্ষোভ
রিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে ইতিমধ্যেই শিল্পতালুক থেকে ঝাঁপ বন্ধ করে চলে গিয়েছেন অনেকে। যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও নানা সমস্যায় জর্জরিত। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও পুরনো এই শিল্পতালুকের পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ হয়নি এডিডিএ। অথচ এখন একটি আধুনিক শিল্পতালুক গড়ার পরিকল্পনা করেছে তারা। এডিডিএ-র এমন সিদ্ধান্ত ‘অবাস্তব’ বলে মন্তব্য করেছে আসানসোল ইন্ডাস্ট্রিয়াল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
আসানসোলের কন্যাপুর এলাকায় নব্বইয়ের দশকে গড়ে ওঠে এডিডিএ শিল্পতালুক। প্রায় ৬০ একর জায়গায় ৮০টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য জায়গা দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে পরিকাঠামোর উন্নতি ও অন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই বিশেষ মেলেনি। উদ্যোগপতিদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর অভাব ও শিল্পতালুকের বেহাল দশায় তাঁরা হতাশ। জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০টি শিল্প ইতিমধ্যেই ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছে।
পুরনো এই শিল্পতালুক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢোকার মূল রাস্তা খানাখন্দে ভরা। কারখানায় যাওয়ার জন্য আশপাশে বাই-লেন কিছু নেই। পায়ে হাঁটা মেঠো পথ ধরে যাতায়াত করতে হয়। নিকাশির বালাই নেই। আগাছায় ভরে গিয়েছে আশপাশ। রাতে আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই। উদ্যোগপতিরা নিজেদের চেষ্টায় কিছু আলোর ব্যবস্থা করেছেন। তালুকের মধ্যে কিছু ফাঁকা জমিতে গজিয়ে উঠেছে কয়েকটি ঝুপড়ি। এলাকা সূত্রে জানা যায়, দিনের বেলায় সেখানে চা, বিস্কুট, ডাল-ভাত মেলে। রাতে সেখানে নানা রকম নেশার কারবার চলে। আসর বসায় সমাজবিরোধীরা। ফলে নিরাপত্তা বলে কিছু থাকে না।
আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে চলছে বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব। নিজস্ব চিত্র।
এই শিল্পতালুকে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও নিরাপত্তার দাবিতে উদ্যোগপতিরা ‘আসানসোল ইন্ডাস্ট্রিয়াল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে একটি সংগঠন গড়েছেন। সংগঠনের সম্পাদক অশোক মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “এখানকার উন্নতির জন্য এডিডিএ-কে বহু বার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কথা তো কানেই তোলা হয় না।” তাঁদের আরও অভিযোগ, বেহাল রাস্তার জন্য পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করতে পারে না। সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্যে কারখানার পাহারাদারেরাও ভয়ে থাকেন। সংগঠনের সহ-সভাপতি অধীর গুপ্তের দাবি, রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে তাঁরা শিল্পতালুকের উন্নতি হবে বলে আশা করেছিলেন। তাঁর কথায়, “আর কোনও আশা দেখছি না। পুরনো তালুকটির অবস্থা না ফিরিয়ে নতুন একটি শিল্পতালুক গড়ার ভাবনা মোটেই বাস্তববাদী নয়।” এই বণিক সংগঠনের অন্যতম কর্ণধার পুলক দাস অভিযোগ করেন, অনেক বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তালুকটির অবস্থা ফেরানোর আবেদন করেছেন। কিন্তু কেউ কান দেননি। তিনি বলেন, “আমাদের শিল্প মার খাচ্ছিল। গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছি।”
এত বার আবেদন সত্ত্বেও কেন শিল্পতালুকের উন্নতির উদ্যোগ হচ্ছে না? এডিডিএ-র বর্তমান চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই তালুকের বেহাল দশার কথা শুনেছেন। তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকার সময়ে এই তালুক বানিয়েছিল। তারা কোনও পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করেনি। তার ভার আমাদের বইতে হচ্ছে। আমরা ২০ একর জায়গায় পৃথক একটি আধুনিক শিল্পতালুক গড়ব।” পাশাপাশি, তাপসবাবুর আশ্বাস, পুরনো তালুকটির সমস্যাগুলিও বিবেচনা করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.