ঠিকাশ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডে (ডিপিএল) আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। জখম অবস্থায় এক জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার পরে এ দিন বিকেলে এক পক্ষ থানায় ও অপর পক্ষ স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। অপূর্ববাবু জানিয়েছেন, বিষয়টি দলের উচ্চস্তরে জানানো হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কোকওভেন থানার পুলিশ।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই ডিপিএলে আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ‘আধিপত্য বিস্তার’ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ছোটখাটো অশান্তি লেগেই থাকত। তবে শুক্রবার তা প্রকাশ্যে চলে আসে। দুর্গাপুর প্রজেক্টস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কেশব মণ্ডল অভিযোগ করেন, এ দিন সকালে তাঁদের সমর্থকদের কাজে ঢুকতে বাধা দেয় দেবদাস মজুমদারের গোষ্ঠী। উল্টে দেবদাসবাবু নিজের গোষ্ঠীর লোকজনদের ঢোকাতে চান। তাঁরা প্রতিবাদ করতে গেলে দেবদাসবাবুর লোকজন তাঁদের উপর চড়াও হয়। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। কয়েক জন অল্পবিস্তর জখম হন। দেবদাসবাবু পাল্টা অভিযোগ করেন, বিনা প্ররোচনায় তাঁর গোষ্ঠীর সদস্য সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়েছে অপর গোষ্ঠীর লোকজন। সঞ্জীব মণ্ডল নামে এক সমর্থককে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। |
এ দিন বিকেলে কেশববাবুর গোষ্ঠীর সদস্য-সমর্থকরা মিছিল করে কোকওভেন থানায় যান। পুলিশের কাছে দেবদাসবাবুর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাঁরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কেশববাবুর বক্তব্য, “আইএনটিটিইউসি-র নাম নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু লোকজন। আমরা তা প্রতিহত করব।” দুর্গাপুর প্রজেক্টস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রবীর মিত্রের অভিযোগ, “আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো হয় আমাদের।” এ দিকে, দেবদাসবাবুর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা ঘটনার বিচার চেয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূবর্বাবুর বাড়িতে জড়ো হন। অপূর্ববাবু তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এ দিনের ঘটনা বিষয়ে দলের উচ্চস্তরে জানানো হবে।”
দেবদাসবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও তৃণমূল নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বাইরে থেকে উস্কানি দিয়ে তাঁর অনুগামীদের উপর হামলা করিয়েছেন।” বিশ্বনাথবাবু এবং চন্দ্রশেখরবাবু অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চন্দ্রশেখরবাবুর কথায়, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিধানসভা নির্বাচনে দল ক্ষমতায় আসার পরে কিছু লোকজন সিপিএম থেকে আমাদের সংগঠনে ঢুকে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করছে। তারাই এ দিনের ঘটনার জন্য দায়ী।” |