সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে ফেরার পথে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে পাঁচ তরুণের মৃত্যু হল। সোমবার বেলা সওয়া তিনটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে হলদিবাড়ি চা বাগানের কাছে। মৃতরা প্রত্যেকে পিকআপ ভ্যানের যাত্রী। ওই ঘটনায় পিকআপ ভ্যানের আরও ৬ যাত্রী জখম হন। তাঁদের প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে জলপাইগুড়িতে রেফার করা হয়। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম অমিত যাদব (২০), শম্ভু ওরাঁও (২২), কাঞ্চন লোহার (২০), প্রমোদ ওরাঁও (১৫) এবং রাজেশ ওরাঁও (৩৫)। তাঁদের বাড়ি বানারহাট থানার কাঁঠালগুড়ি চা বাগানে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “দুর্ঘটনায় পাঁচ জন মারা গিয়েছে। ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। সেটির চালককে ধরা হয়েছে।” পুলিশ জানায়, এলাকার কিশোর ও যুবকেরা মিলে কাঁঠালগুড়ি বাগানের পাশের বাজারে কয়েক বছর ধরে চাঁদা তুলে সরস্বতী পুজো করে আসছে। ফি বছরের মত এবারও ২০ কিলোমিটার দূরে গয়েরকাটার পাশে বয়ে চলা আংরাভাসা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল। |
এ দিন প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য সকাল থেকে তোড়জোড় শুরু হয় কাঁঠালগুড়ি বাজারে। পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে গাড়িতে মাইক বেঁধে দুপুর থেকে নাচ গান শুরু হয়। দুপুরে প্রতিমা নিয়ে এলাকার ঘোরানোর পরে ২২ জন কিশোর ও যুবক পিকআপ ভ্যানে চড়ে রওনা হয়েছিলেন। ছোট গাড়িতে এতজনের জায়গা না থাকায় কয়েকজন গাড়িতে ঝুলতে থাকেন। প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে ফেরার পথে হঠাঠ একটি মাছের খালি ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের ডান দিকে ধাক্কা লাগে। ঝুলতে থাকা ৫ জন আঘাত পেয়ে ছিটকে পড়েন পিচ রাস্তার উপরে। ঘটনাস্থলে তাঁদের মৃত্যু হয়। ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরেই চালক ধনীরাম ওরাঁও পিকআপ ভ্যান নিয়ে বেশ কিছু দূর চলে যান। পরে ট্রাকের অন্যান্য যাত্রীদের চিৎকারে চালক ফিরে আসেন। তার গাড়ি যে দুঘর্টনাগ্রস্ত হয়েছে সে মুহূর্তে তা সে বুঝতে পারেনি বলে দাবি করেছেন পিকআপ ভ্যানের চালক। তিনি বলেন, “মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়নি। দুর্ঘটনা ঘটার পরে কিছু দূর চলে যাই। চিৎকার শুনে গাড়ি থামিয়ে দেখি অনেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে । লোকজনের সাহায্যে গাড়িতে তুলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি।” প্রত্যক্ষদর্শীরা তাড়া করে ট্রাকটি আটক করেন। বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের চিকিৎসক দেবকুমার মণ্ডল বলেন, “মৃতদের শরীরের নানা অংশে ছাড়াও মাথায় আঘাত লেগেছে। আহতদের অবস্থা গুরুতর।” জখম রাজু প্রসাদ বলেন, “গাড়িতে মাইকে বাজানো গানের সুরে সকলে নাচছিল। হঠাৎ একটা আওয়াজ হল। আর কিছু জানি না।” |