ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে সেখানকার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মণি ছেত্রীর গ্রেফতারের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের একাংশ আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ওই প্রবীণ চিকিৎসকের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এ বার সরব হল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও। সোমবার মোর্চার দুই বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী ও তিলক দেওয়ান মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রসচিব জ্ঞানদত্ত গৌতমের সঙ্গে দেখা করেন। পরে হরকাবাহাদুর জানান, আমরি-কাণ্ডে মণি ছেত্রীকে গ্রেফতার করায় পাহাড়ের মানুষ ব্যথিত। এতে দার্জিলিঙে ফের অশান্তি ও উত্তেজনা ছড়াতে পারে। এই আশঙ্কার কথা তাঁরা স্বরাষ্ট্রসচিবকেও জানিয়েছেন।
ছেত্রীর গ্রেফতারির প্রতিবাদ করেছেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও। পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের জেলা সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বলেন, “উনি (ছেত্রী) শুধু বাংলার নন, গোটা দেশের সম্পদ। দেশে-বিদেশে ওঁর কত ছাত্র! ৯৩ বছরের প্রবীণ, শ্রদ্ধাভাজন এক চিকিৎসককে গ্রেফতারের আগে ভাবলেন না, ওঁর দায়িত্ব কী!” সরকারকে সতর্ক করে দেওয়ার সুরে সিপিএম নেতা বলেন, “এ ভাবে চললে চিকিৎসক পাবেন না। কেমন করে হাসপাতাল চলবে, সংশয় আছে।” সরকার কী বলছে? মোর্চার বিধায়কেরা জানান, স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁদের বলেছেন, মণিবাবু যে-হেতু ওই হাসপাতালের এমডি, তাই তাঁকে গ্রেফতার না-করে উপায় ছিল না। ওই বিধায়কেরা জানান, মণিবাবু কোনও নার্সিংহোমে থাকতে চাইলে সরকার তার জন্য প্রস্তুত বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন।
পাহাড়ের ক্ষোভের কারণ কী? হরকাবাহাদুর জানান, মণি ছেত্রী পাহাড়ের মানুষের কাছে ‘আইকন’। আদতে কালিম্পঙের বাসিন্দা হলেও তিনি এত বছর ধরে কলকাতায় মানুষের সেবা করে আসছেন। অথচ বৃদ্ধ বয়সে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। তাঁর দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন মোর্চা নেতৃত্ব। সংশ্লিষ্ট মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
৮ ডিসেম্বর রাতে আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ৯৪ জন মারা যান। সেই ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি হাসপাতালের এমডি মণি ছেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগেও কয়েক বার তাঁকে জেরা করেছিলেন গোয়েন্দারা। পুলিশের দাবি, তদন্তে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়ার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু হরকাবাহাদুরের অভিযোগ, এক অদৃশ্য মহলের চাপেই মণি ছেত্রীকে গ্রেফতার করেছে প্রশাসন। |