ঢাকুরিয়া আমরি’তে যে আগুন লেগেছে, ৮ ডিসেম্বর রাতে সে খবর তিনি চেপে রেখেছিলেন বলে ওই হাসপাতালের নাইট ইনচার্জ সাজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ আনল সরকারপক্ষ। সাজিদ এবং আমরি’র অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনের আর্জিও নাকচ হয়ে গেল সোমবার।
এ দিন আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী হেফাজত করিমের এজলাসে রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য বলেন, আগুন লাগার খবর সাজিদ বহুক্ষণ সহকর্মীদের কাছেই চেপে রেখেছিলেন। ৯ ডিসেম্বর ভোর চারটের আগে তিনি তাঁর লোকজনকে সে কথা জানাননি বলে সরকারপক্ষের অভিযোগ। তাদের দাবি, সেই ‘লোকজনের’ নামও সাজিদ পুলিশকে জানিয়েছেন। তাই গুরুতর ঘটনাটির দায় তিনি এড়াতে পারেন না। আমরির’র অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশকে তিনি আরও তথ্য দিতে পারেন এই সম্ভাবনার নিরিখে অভিযুক্তকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন জানান সরকারপক্ষের কৌঁসুলি।
অন্য দিকে সাজিদের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় জামিনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, তাঁর মক্কেলকে পুলিশ লালবাজারে ডেকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাই তাঁকে আর পুলিশি হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই। আদালত অবশ্য জামিন নাকচ করে সাজিদকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। |
অ্যাম্বুল্যান্সে রাধেশ্যাম অগ্রবাল।-নিজস্ব চিত্র |
পাশাপাশি পৃথাদেবীর কৌঁসুলি অশোক মুখোপাধ্যায় এ দিন জামিনের সওয়ালে বলেন, গ্রেফতার হওয়ার আগে গত দু’মাস ধরে তাঁর মক্কেল রোজই লালবাজারে এসেছেন। তাঁর অভিযোগ, সেখানে এমন কিছু কাগজে পৃথাদেবীর সই নেওয়া হয়, যার বিষয়বস্তু পুলিশ তাঁকে জানায়নি। তাঁকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে হার্ড ডিস্ক ও কাগজপত্র উদ্ধারও করেছে পুলিশ। এর পরেও তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অশোকবাবু। জামিনের বিরোধিতা করে শক্তিবাবু দাবি করেন, আমরির প্রশাসনিক ভারপ্রাপ্ত পৃথাদেবী অগ্নিকাণ্ডের পরে হাসপাতাল থেকে কিছু কাগজপত্র সরিয়ে রেখেছিলেন। ২৯ জানুয়ারি তিনি পুলিশের হাতে বেশ কিছু কাগজপত্র তুলে দিলেও প্রশাসনিক নথির সবটা এখন মেলেনি বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
এবং সেগুলো উদ্ধারের স্বার্থেই পৃথাদেবীকে আরও সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখা দরকার বলে সওয়াল করে সরকারপক্ষ। আদালত পৃথাদেবীর জামিন খারিজ করে তাঁকেও ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
আমরি’র ধৃত আট ডিরেক্টরকেও ওই দিন আদালতে হাজির করানোর কথা। আর এক ডিরেক্টর রাধেশ্যাম অগ্রবালকে হাজির করানো হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। তত দিন তাঁকে এসএসকেএমে-ই রাখতে বলেছেন বিচারক। এ দিন তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে আদালতে আনা হয়েছিল। রাধেশ্যামের আইনজীবী অমিত ভট্টাচার্য সওয়ালে বলেন, তাঁর মক্কেল হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন, দু’-এক দিনে শুনানি হওয়ার কথা। এ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএমে-ই রাখা হোক। সরকারপক্ষ রাধেশ্যামকে জেল হাসপাতালে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছিল। তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। |