বহির্বিভাগ খোলার কথা বেলা ৯টায়। অথচ সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রোগীদের টিকিট কাউন্টারে কোনও কর্মী যাননি। ফলে, দাঁড়িয়ে থাকতে হয় প্রায় দেড়শো রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বারবার জানালেও তাঁরা বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাননি বলে অভিযোগ। দূর থেকে আসা রোগীর পরিজনেরা এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁরা লাঠি, ঢিল নিয়ে দরজা-জানলার কাচ ভেঙে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “কর্মীদের কোনও ভুল থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার জন্য এ ভাবে হাসপাতালে ভাঙচুর করা ঠিক নয়। সামান্য কিছু হলেই সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। অভিযুক্তদের ধরা হবে। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলব।” |
কর্মীরা দেরিতে আসায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুর। সোমবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সামনে থাকা ওই কাউন্টারে রোগীদের টিকিট নবীকরণের দায়িত্বে এ দিন যে স্বাস্থ্যকর্মীর থাকার কথা, তিনি কাউকে কিছু না-জানিয়ে কাজে না-আসায় বিপত্তি ঘটেছে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার বিজয় থাপা বলেন, “ওই কাউন্টারে দু’জন কর্মী থাকার কথা। তাঁদের এক জন এ দিন ছুটি নিয়েছেন। অপর জন কাউকে কিছু না-জানিয়ে কাজে যোগ দেননি। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর পেয়ে অন্য কর্মী পাঠানো হলেও উত্তেজিত জনতা ততক্ষণে কাউন্টার লাগোয়া অর্থোপেডিক বিভাগের দরজা, জানলার কাচ ভাঙচুর শুরু করেছেন।” তাঁর দাবি, পর্যাপ্ত কর্মী না-থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই পরিষেবার কাজে বিঘ্ন ঘটছে।
এ দিন বিক্ষোভ, ভাঙচুরের সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বহির্বিভাগের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। অনেকে ভয়ে পালিয়ে যান। কেউ কেউ ওয়ার্ডের দরজা বন্ধ করে পুলিশকে খবর দেন। নাম নথিভুক্ত করার দায়িত্বে থাকা কর্মী জ্যোৎস্না মল্লিক জানান, ক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে ঘর থেকে বার হতে বলেন। তিনি ভয়ে দরজা আটকে দেন।
রাজগঞ্জের বাসিন্দা দিলীপ বসাক, চোপড়া থেকে আসা নরেন মাইতিদের অভিযোগ, সকাল ৯টায় বহির্বিভাগ খোলে। তাই অনেক আগে থেকেই টিকিট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়ান তাঁরা। প্রায় দেড়শো বাসিন্দা টিকিট কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কর্মী আসছে না দেখে অপেক্ষায় থাকায় রোগীর পরিজনদের অনেকেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। |