অম্বেডকর পুরস্কৃতদের জন্য কেরিয়ার অ্যাপটিটিউড টেস্ট
ফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে আগেই বি আর অম্বেডকর মেধা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এ বার সেই মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘কেরিয়ার অ্যাপটিটিউড টেস্টে’র ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। ওই মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যতে কোন পথে গেলে ভাল হবে সে বিষয়ে একটি ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন।
২০১০ সালে রাজ্যের ১ হাজার ১ জন ছাত্রছাত্রী এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। যার মধ্যে তপসিলি জাতির ছাত্রছাত্রী ছিল ৫০৫ জন ও উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রী ছিল ৪৯৬ জন। মাধ্যমিকে ফলাফলের নিরিখেই ছাত্রছাত্রীদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১১ সালেও প্রায় এক হাজার ছাত্রছাত্রী অম্বেডকর মেধা পুরস্কার পেয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে পুরস্কৃত হয়েছে ১১০ জন। যার মধ্যে ৮৬ জন তফসিলি উপজাতিভুক্ত এবং ২৪ জন তফসিলি জাতিভুক্ত। সম্প্রতি সব মেধাবী ছাত্রছাত্রীর হাতেই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। ২০১০ ও ’১১ সালের সেই পুরস্কৃত ছাত্রছাত্রীদের জন্যই এ বার ‘কেরিয়ার অ্যাপটিটিউট টেস্টে’র ব্যবস্থা হতে চলেছে। রাজ্যের তফসিলি জাতি, উপজাতি উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই এ জন্য শিবির করা হবে। ৩০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে শিবির। প্রথম দিন কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, পুরুলিয়া ও বীরভূমে শিবির হবে। ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সব শিবির শেষ হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে শিবির হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। শিবির হবে নির্মল-হৃদয় আশ্রম ক্যাথলিক চার্চে। এক দিন, কয়েক ঘণ্টার শিবিরে ছাত্রছাত্রীদের নানা প্রশ্ন করা হবে। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে শোনা হবে তার উত্তর। উত্তর দেওয়া থেকেই বুঝতে হবে এক জন ছাত্র বা ছাত্রীর কোন বিষয়ে আগ্রহ বেশি। ওই ছাত্র বা ছাত্রী ভাষা-সাহিত্য নিয়ে ভবিষ্যতে পড়তে চায় নাকি বিজ্ঞান বিষয়ে বেশি আগ্রহী। ছাত্রছাত্রীর মনে কোনও বিষয় নিয়ে কোনও রকম বিভ্রান্তি রয়েছে কি নাতা-ও বোঝার চেষ্টা করা হবে শিবিরে। বিভ্রান্তি থাকলে তা দূর করারও চেষ্টা হবে। সংশ্লিষ্ট ছাত্র-ছাত্রীকে দেওয়া হবে স্পষ্ট পথ-নির্দেশ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের অনেক বিষয় নিয়েই স্পষ্ট ধারণা থাকে না। অনেক সময়ে দেখা যায়, তাদের পরিবারের সদস্যদেরও বাইরের জীবন ও জগৎ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাই নিজেদের ছেলেমেয়েকে কোন বিষয়ে পড়ালে ভাল, তারা কোন পথে যেতে পারেতা নিয়ে এক ধরনের সিদ্ধান্তহীনতা কাজ করে তাদের মধ্যেও। সেই সব সমস্যা দূর করার উদ্দেশ্যেই শিবির করে ‘কেরিয়ার অ্যাপটিটিউট টেস্টে’র এই ব্যবস্থা। প্রশাসনের বিশ্বাস, এর ফলে প্রতিটি ছাত্রছাত্রী সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা উঠে আসবে। যে ধারণা লিপিবদ্ধ করেও রাখা হবে। তৈরি হবে তথ্য-ভাণ্ডার। কোনও জেলার তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত কত জন ছাত্র-ছাত্রী ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়, কত জন ইঞ্জিনিয়র, কত জনই বা রসায়ন বা অর্থনীতি নিয়ে পড়তে চায়সে সম্পর্কে তথ্য থাকবে প্রশাসনের কাছেও। সেই মতো সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীর আগ্রহের বিষয়টিতে তাকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ দিয়ে সময়-সময় সাহায্য করতে পারবে প্রশাসন। তবে এই বিশেষজ্ঞ-পরামর্শের বিষয়টি নিয়ে এখনও পাকা সিদ্ধান্ত হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “বর্তমানে তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের জন্য জয়েন্ট-এন্ট্রান্স কোচিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছেই। তা ছাড়াও প্রতিটি জেলাই সর্বশিক্ষা মিশন-সহ বিভিন্ন তহবিল থেকে শিক্ষা খাতে অর্থ ব্যয় করতে পারে। যদি রাজ্য জুড়ে সিদ্ধান্ত না-ও গৃহীত হয় সে ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসন নিজেদের উদ্যোগেই জেলার ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ শিবির করতে পারে।” তথ্য-ভাণ্ডার তৈরি হলে জেলা-ভিত্তিক শিক্ষা-পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে সরকারের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.