|
|
|
|
সিপিএমের জেলা সম্মেলন শুরু পশ্চিমে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শুরু হল সিপিএমের ২১ তম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন। মেদিনীপুর শহরের জেলা পরিষদ হলে সোমবার শুরু হওয়া সম্মেলন চলবে বুধবার পর্যন্ত। সে দিন প্রকাশ্য সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে। উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সোমবার সকালে জেলা পরিষদ হলের অদূরে বিদ্যাসাগর হল সংলগ্ন মাঠে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। উপস্থিত ছিলেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব, দীপক দাশগুপ্ত, মদন ঘোষ প্রমুখ। পতাকা উত্তোলনের পরে হয় ‘শহিদ স্মরণ’। শহিদবেদীতে মাল্যদান করেন রাজ্য ও জেলা নেতারা। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, গত ৪ বছরে তাঁদের ২৫০ কর্মী খুন হয়েছেন। বেলা ১১ টা থেকে জেলা পরিষদ হলে শুরু হয় প্রতিনিধি সম্মেলন। |
|
দলীয় সম্মেলনে দীপক সরকারের সঙ্গে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা। নিজস্ব চিত্র। |
একদা ‘লালদুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুরেও এখন ‘কোণঠাসা’ সিপিএম। এত ‘প্রতিকূল’ পরিস্থিতিতে আগে কখনও সম্মেলন করতে হয়নি সিপিএম নেতৃত্বকে। এর আগে কেশপুর, গড়বেতা-সহ বেশ কয়েকটি জোনাল কমিটির সম্মেলন এলাকার বাইরে, ‘গোপনে’ মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, জেলা সম্মেলনের সমর্থনে প্রচার-কাজও করা যায়নি বহু জায়গায়। জেলা সম্মেলন উপলক্ষে জনসংযোগ বাড়াতে এ বার বাড়ি বাড়ি অর্থ সংগ্রহেও জোর দিয়েছিল জেলা সিপিএম। কিন্তু, অধিকাংশ এলাকায় অর্থ-সংগ্রহে তেমন সাড়া মেলেনি বলে দলীয় সূত্রে খবর। এ ক্ষেত্রেও ‘দুর্বল’ সংগঠনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন অনেকে। সিপিএমের এক জেলা নেতা অবশ্য বলেন, “যেখানে সম্ভব সেখানেই দলীয় কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতির জেরে সর্বত্র এই অভিযান হয়তো সম্ভব হয়নি।” অনেক জায়গায় আবার দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছেন। ফলে, ওই সব এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি সংগঠিত করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। তপন ঘোষ, সুকুর আলি-র মতো নেতারা বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছাড়া। এন্তাজ আলি, অনুজ পাণ্ডের মতো নেতারাও ‘ফেরার’। সম্মেলনেও তাঁরা গরহাজির। নেই একদা দাপুটে নেতা, গড়বেতার বিধায়ক, প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষও। দাসেরবাঁধ কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে গত সাড়ে পাঁচ ধরে তিনি বন্দি। সোমবারই তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার, জেলা সম্মেলন শেষের দিনই রায় ঘোষণা করবে উচ্চ আদালত। ‘ফেরার’দের কেউ কেউ জেলা নেতৃত্বের কাছে সম্মেলনে ‘গোপনে’ হাজির থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও নেতৃত্বই তাঁদের ‘গরহাজির’ থাকার পরামর্শ দেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। যদিও তপন-সুকুর, অনুজ-এন্তাজরা প্রত্যেকেই গরহাজির থেকেও ইতিমধ্যে জোনাল কমিটিতে স্বপদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। জেলা সম্মেলনে সম্পাদক দীপক সরকারের পুনর্নির্বাচনও সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মী। কেননা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে জোনাল পর্যায়ে কাটাছেঁড়ার সম্ভাবনা থাকলেও, তা কার্যত হয়নি। জোনাল পর্যায়ে ‘রাশ’ ধরে রেখেছেন দীপকবাবুই।
সোমবার সম্মেলনের শুরুতে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন দীপক সরকার। দুপুরের পর সেই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা শুরু করেন প্রতিনিধিরা। সম্মেলন শুরুর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু বলেন, “ভুল-ত্রুটি থাকলে সম্মেলনে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে আগামী দিনের কর্মসূচিও গৃহীত হবে।” |
|
|
|
|
|