জগদ্ধাত্রী প্রতিমার ভাসানকে কেন্দ্র করে হাঙ্গামা বেধে গিয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক ভবানীপুরে। সোমবার রাতে সরস্বতী প্রতিমার বিসর্জন ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হল ভবানীপুরেরই পদ্মপুকুর।
গণ্ডগোল বাধে ভাসানের শোভাযাত্রার পথ নিয়ে। পদ্মপুকুর লেনে বস্তির সামনে দিয়ে রামময় রোডের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হবে কেন, প্রথমে তা-ই নিয়ে বচসা বাধে। তা থেকেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। শোভাযাত্রা থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে এলাকার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর হয় রাস্তার ধারে দাঁড় করানো কয়েকটি গাড়ি এবং সিপিএমের একটি পার্টি অফিসও। দু’তিন জন জখম হয়েছেন বলে পুলিশি সূত্রের খবর। |
ভেঙে গিয়েছে গাড়ির উইন্ড স্ক্রিন। ছবি: রণজিৎ নন্দী |
আতঙ্কিত বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভ্যানে কোনও প্রতিমা ছিল না। তবু ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের রামময় রোড থেকে শোভাযাত্রা শরৎ বোস রোডের ওই পাড়ায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যা আগে কখনও হয়নি। এর পিছনে অভিসন্ধি আছে। শোভাযাত্রার অধিকাংশ লোকজনই মত্ত অবস্থায় ছিল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, বারবার থানায় ফোন করা সত্ত্বেও পুলিশ আসতে দেরি করায় হাঙ্গামা বড় আকার নেয়। পুলিশ অবশ্য রাতেই অভিযুক্তদের সন্ধানে আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালায়। একটি গাড়ি আটক করা হয়।
নভেম্বরে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা ভাসানে বাজি ফাটানোকে কেন্দ্র করে ভবানীপুর থানার সামনে ধুন্ধুমার বেধে গিয়েছিল। শব্দবাজি রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। যথেচ্ছ ইট ছোড়া হয় পুলিশকর্মী এবং ভবানীপুর থানা ভবনের উপরে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে সোমবার রাতে ওই এলাকায় প্রায় একই ধরনের হাঙ্গামা বেধে যাওয়ায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকায় একটি বস্তি রয়েছে। শোভাযাত্রাটি সেই বস্তির রাস্তায় ঢুকে পড়ায় সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে গোলমাল বাধে। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শরৎ বোস রোডের ওই এলাকায় বিভিন্ন বহুতল বাড়ির জানলার কাচ ভাঙা। রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে বোতলের ভাঙা কাচ। কাচ ও দরজা ভাঙা অবস্থায় পড়ে দু’তিনটি গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রাস্তার ধারে জড়ো করা অবস্থায় পড়ে থাকা ইটের স্তূপ থেকে ইট তুলে বিভিন্ন বাড়িতে ছুড়ে মারা হয়। পদ্মপুকুর লেনে সিপিএমের পার্টি অফিসেও ভাঙচুর চলে। গোলমালের জন্য তৃণমূলের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক জন সক্রিয় সদস্যকে দায়ী করেছে সিপিএম। ওই দলের পদ্মপুকুর (পূর্ব) আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সুশঙ্কর মণ্ডলের অভিযোগ, “৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক জন সক্রিয় তৃণমূলকর্মী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমাদের কাছে তাঁদের নামও রয়েছে। এই ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” তৃণমূলের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সুরজিৎ দাশের কথায়, “আমাদের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নয়।” |