বাগুইআটিতে খুন
কথায় ‘অসঙ্গতি’, সন্দেহ নিখোঁজের স্ত্রীকেও
বাগুইআটির ফ্ল্যাটে মা-মেয়ের খুনের ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন রাজেশ ভারতিয়ার স্ত্রী-র কথায় এত ‘অসঙ্গতি’ কেন? এটাই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, দফায় দফায় জেরা করে রাজেশের স্ত্রী রাধা ভারতিয়ার বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছেন তাঁরা। বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাধার কথায় বেশ কয়েকটি বিভ্রান্তি থাকায় পুলিশের অনুমান, রাজেশ হদিস জানেন রাধা। তাই রাধাকেও সন্দেহের ঊর্ধে রাখা হচ্ছে না।”
প্রথম বিভ্রান্তি রাজেশের ফোন বন্ধের সময়কে কেন্দ্র করে। পুলিশ জানায়, জেরায় রাধা প্রথমে বলেছিলেন ২৬ তারিখ সন্ধ্যা থেকে রাজেশকে ফোনে পাওয়া যায়নি। অথচ তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজেশের ফোন ২৭ তারিখ দুপুর পর্যন্ত খোলা ছিল। কারণ রাজেশ ফোনে শেষ কথা বলেন খুনের দিন অর্থাৎ ২৭ তারিখ দুপুরে, সঙ্গীতার বোন সুনীতার সঙ্গে। সুনীতা রাজেশকে ফোন করে দিদির খবর জানতে চান। রাজেশ সুনীতাকে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানে না। খোঁজ নিয়ে দেখছেন। এর পরেই রাজেশের ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
অন্য দিকে রাধার বক্তব্য অনুযায়ী ২৬ তারিখ রাত থেকেই রাজেশকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তা হলে রাধা কেন দু’দিন দেরি করে ২৮ তারিখ বিকেলে নিউ টাউন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করলেন? রাধা পুলিশকে জানিয়েছেন, ২৬ তারিখ রাতে তপসিয়ার সিকন্দর ভাই নামে এক ব্যক্তির কাছে কাজের জন্য গিয়েছিলেন রাজেশ। কিন্তু পুলিশ সিকন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে ওই রাতে রাজেশ নামে কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাননি। সব মিলিয়েই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুলিশকে কোনও ভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন রাজেশের স্ত্রী? রবিবার দীর্ঘক্ষণ রাধাকে জেরা করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে রাধাকে ফের জেরা করা হবে।
বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার বলেন, “তদন্তে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে অনেকটাই পরিষ্কার যে রাজেশই সঙ্গীতা ও ইশার খুনের সঙ্গে জড়িত। তবে খুনের দিন ঘটনাস্থলে শুধু রাজেশ একা নন, একাধিক ব্যক্তির থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা সঙ্গীতার ফ্ল্যাটে ঘুরে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে জানিয়েছেন, বেশ কিছু নতুন সূত্র মিলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থেই সব কিছু এখনই জানানো যাবে না।”
খুনের মোটিভ খুঁজতে গিয়েও রাজেশের নামই উঠে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বার বার উঠে আসছে সঙ্গীতাদের ফ্ল্যাট কেনার প্রসঙ্গও। পুলিশ জানতে পেরেছে, রাজেশের সঙ্গে গিয়ে দু’টি ফ্ল্যাট দেখেছিলেন সঙ্গীতা। তার মধ্যে বাগুইআটি এলাকায় ৩০ লক্ষ টাকার একটি ফ্ল্যাট সঙ্গীতার পছন্দ হয়। কিন্তু সঙ্গীতাকে তাঁর স্বামী অরুণ জানিয়ে দেন, ফ্ল্যাট কেনার এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও বেশ কয়েক লক্ষ টাকা সঙ্গীতা কোনও ভাবে জোগাড় করেছিলেন বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে। সেই টাকা জোগাড়ের কথা রাজেশও জানতেন বলে পুলিশের অনুমান। রাজেশের আর্থিক অবস্থা বেশ কয়েক মাস ধরে ভাল যাচ্ছিল না। টাকা আত্মসাৎ করতে রাজেশ ২৬ তারিখ রাতে সঙ্গীতার বাড়িতে গিয়েছিলেন কি না, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.