পথ অবরোধের রাজনীতি এ শহরে নতুন নয়। তবে সোমবার তা ঘটল ‘নিয়ম ভাঙার’ দাবিতে। কার্যত অন্যায়ের প্রশ্রয় চেয়ে পথে নামলেন এক দল অটোচালক। দিনের ব্যস্ত সময়ে যান-চলাচল বন্ধ রইল পার্ক সার্কাস ৪ নম্বর সেতুর কাছে। যার জেরে সমস্যায় পড়েন বহু সাধারণ মানুষ। আর যে সংগঠনের মদতে এ ঘটনা ঘটল, তারা এখনও বর্তমান সরকারেরই শরিক।
শহরের রাস্তায় অটো নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে পুলিশ। নিয়ম ভাঙলে রয়েছে জরিমানার ব্যবস্থাও। এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ সেই আইনের প্রতিবাদে পরপর অটো দাঁড় করিয়ে রাস্তা আটকান অটোচালকেরা। মিনিট পনেরো গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিতে হয় ওই রাস্তায়। যে সব অটো দিয়ে রাস্তা আটকানো হয়েছিল, সেগুলিতে আইএনটিইউসি-র পতাকা লাগানো ছিল। |
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে অটোয় চার জনের বেশি যাত্রী তোলা নিষেধ। সে নিয়ম ভেঙে যাত্রী তোলেন ওই এলাকার অটোচালকদের একাংশ। তাই তাঁদের জরিমানাও হয়। এর প্রতিবাদেই এ দিন রাস্তা আটকান বিক্ষোভকারীরা। যদিও অবরোধকারীদের দাবি, নিয়ম না ভাঙলেও, পুলিশ নানা অজুহাতে ‘কেস’ দেয় তাঁদের। তবে, কারণ যা-ই হোক না কেন, এ দিনের বিক্ষোভে ফের দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদের উদ্দেশেও গালিগালাজ করেন অবরোধকারীরা।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বইমেলা চলার জন্য কয়েক দিন ধরেই পার্ক সার্কাসে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। এ দিন হঠাৎ রাস্তা আটকে দেওয়ায় পার্ক সার্কাস এবং ই এম বাইপাস, দু’দিকের গাড়ি-চলাচলই স্তব্ধ হয়ে যায়। এক দিকে, পার্ক সার্কাস-এজেসি বসু রোড ফ্লাইওভার ও অন্য দিকে, সায়েন্স সিটির কাছাকাছি পৌঁছয় গাড়ির লাইন।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আর বন্ধ-অবরোধের রাজনীতি চলবে না। সেই কথা আদৌ কার্যকর হবে কি না, এ দিনের ঘটনা ফের সামনে আনল সে প্রশ্ন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আইএনটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক কামারুজ্জামান কামার বলেন, “অবরোধ কখনওই সমর্থন করি না। খবর পেয়েই অবরোধ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, পুলিশ বেছে বেছে আইএনটিইউসি-র সদস্যদেরই জরিমানা করছে। এর পিছনে প্রধান শাসকদলের ট্রেড ইউনিয়নের মদত রয়েছে বলেও তাঁর দাবি। এ নিয়ে পুলিশের উচ্চ মহলে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। |