সরকারি হোমে ঠাঁই হল সোহাগির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
‘প্রেমিকের’ পরিবারের হাতে নিগৃহীত বধূ সোহাগি লেটের ঠাঁই হল সরকারি হোমে। ঠিক যেমন হয়েছিল আদিবাসী তরুণী সুনীতা মুর্মুর। রবিবার রাতে সোহাগিকে প্রশাসনিক উদ্যোগে রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুরে ‘পুষ্পরাগ নিকেতন’ নামে সরকারি হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে তিন বছরের বেশি কাউকে রাখা হয় না। বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “সরকারি নিয়মনীতি মেনে ওই বধূকে আপাতত কাউন্সেলিংয়ের জন্য হোমে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে সমস্ত আইনি জটিলতা খতিয়ে দেখে ওই বধূর ইচ্ছানুসারে প্রশাসন থেকে তাঁর বাড়ি পাল্টানোর বন্দোবস্ত করা হবে। তবে যে ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সোহাগি,
|
হোমে সোহাগি লেট।
নিজস্ব চিত্র। |
তাতে ওঁর কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই হোমে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
গত ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রামপুরহাটের শিবদাসপুর গ্রামে সোহাগিকে মাথার চুল কেটে, অর্ধনগ্ন অবস্থায় গ্রাম ঘোরানোর অভিযোগ ওঠে তাঁর ‘প্রেমিক’ তামাল লেটের পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে তামালের মা লবানি লেট ও দিদি সরস্বতী লেটকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁরা আপাতত জেল হেফাজতে। রবিবার রাতে ওই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে শ্রীকান্ত লেট নামে শিবদাসপুরের আরও এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার ধৃতকে রামপুরহাট আদালতে হাজির করানো হয়। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে ধরা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।” যে হোমে সোহাগির ঠাঁই হয়েছে, সেটির সম্পাদক সত্যব্রত ভট্টাচার্য এ দিন সকালে সোহাগির সঙ্গে কথা বলেন। সত্যব্রতবাবু বলেন, “সামাজিক সমস্যায় জড়িত মহিলাদের (১৫ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত) স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বিনা খরচে থাকা-খাওয়া-চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ধরনের সময়োপোযোগী আধুনিক বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই হোমে। সোহাগির সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁর ইচ্ছানুসারে সেলাই, উলবোনা, সুচিশিল্প, কম্পিউটার বা হস্তচালিত তাঁতের প্রশিক্ষণ নিতে পারে।” আর সোহাগির নিজের কথায়, “তামালকে ভালবেসে মন্দিরে বিয়ে করেছিলাম। তামালকেই স্বামী হিসাবে পেতে চাই। তা যদি না হয়, তা হলে প্রশাসন যা চাইবে তাই করব।” |