শিশু ও প্রসূতিদের জন্য নিম্নমানের ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না হচ্ছে, এই অভিযোগে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ঘেরাও করে রাখলেন গ্রামবাসীরা। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কাটোয়া ১ ব্লকের সুদপুর গ্রামের বীণাপাণি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। স্থানীয় বিডিও এবং শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পরে ছাড়া পান কর্মীরা। সিডিপিও মালবিকা মজুমদার বলেন, “ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীকে শো-কজ করা হবে। খাওয়ার অযোগ্য ওই ডাল তিনি কী ভাবে পেলেন, তা জানাতে হবে।” |
এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৫৩ জন শিশু ও ৭ জন প্রসূতির জন্য রান্না হয়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানে বেশ কিছু দিন ধরেই নিম্নমানের মুসুর ডাল দিয়ে রান্না করা হচ্ছিল। তাঁদের অভিযোগ, ওই খিচুড়ি খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। এমনকী ওই খিচুড়ির সঙ্গে সয়াবিন জাতীয় পুষ্টিকর সব্জি দেওয়া হচ্ছিল না। এ নিয়ে অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল।
এ দিন সকালে খিচুড়ি রান্না করার আগে মুসুর ডাল রোদে শুকোতে দেওয়া ছিল। তা দেখে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। স্থানীয় বাসিন্দা রাধারমণ পাল, স্নেহা পালরা বলেন, “স্কুলের ভিতর যেতেই ডাল থেকে দুর্গন্ধ পাই। ডালে অনেক নোংরা ছিল।” মণীষা পাল, তপন চক্রবর্তীদের কথায়, “শুধু ডাল নয়, পোকা ধরা চাল দিয়েও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রসূতি ও শিশুদের জন্য ‘সুষম আহার’ তৈরি করা হয়!” এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছন্দা ঘোষালকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিডিও সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ মেনে নিয়ে বিডিও বলেন, “শিশু ও প্রসূতিদের এ দিন নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছিল। এ ব্যাপারে মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।” সিডিপিও মালবিকা মজুমদার ঘটনাস্থল ঘুরে এসে বলেন, “মুসুর ডাল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ডাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
ওই কেন্দ্রের কর্মী ছন্দা ঘোষাল বলেন, “অক্টোবর মাসে ওই ডাল দেওয়া হয়েছিল। আমার বাড়িতে থাকার সময়ে সম্ভবত তা নষ্ট হয়ে যায়। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল বলে রোদে দিয়েছিলাম।” তা বলে দুর্গন্ধযুক্ত ডাল দিয়ে শিশুদের রান্না হবে? তাঁর জবাব, “বুঝতে পারিনি। ভুল হয়ে গিয়েছে।” |