গত তিন বছর ধরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি, বিকমের প্রতিটি পার্ট পরীক্ষার খারাপ ফলের জন্য দায়ী সিপিএম সমর্থক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাই। সোমবার এই অভিযোগ তুলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ামককে স্মারকলিপি দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষেদর সভাপতি অশোক রুদ্রের অভিযোগ, “এই সিপিএম সমর্থকদের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কলঙ্কিত হচ্ছে। বার বার এ ব্যাপারে নজর দিতে বলা হলেও তা করা হচ্ছে না।” তাঁর আরও অভিযোগ, “পার্ট ১ ও পার্ট ২ পরীক্ষার ফল প্রকাশে অনর্থক দেরি হওয়ায়, পার্ট ৩ পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে পারছেন না পরীক্ষার্থীরা। ফলে পার্ট ৩ পরীক্ষার ফল খারাপ হচ্ছে। ফল খারাপ হওয়ায় বহু ছাত্র-ছাত্রীই স্নাতকোত্তর পর্বে ভর্তি হতে পারছেন না। এই শূন্য আসনগুলিতে ভর্তি হচ্ছেন বহিরাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিকারের দাবিতে এ দিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ামককে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। |
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান। কিছু ক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে। বিক্ষোভকারী আসানসোল গালর্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অদিতি চক্রবর্তীর অভিযোগ, “বিকম পার্ট ১ ও ২-র মোট ৯০ জন পরীক্ষাথীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ৪০ জন। ইতিহাস ও রসায়ন অনার্সেও অর্ধেকের বেশি ছা্ত্রী ফেল করেছেন।” বর্ধমান রাজ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভাশিস ঘোষ জানান, পর পর তিন বার অর্থাৎ পার্ট-১, ২ ও ৩ পরীক্ষায় ফেল করায় ৩৫ জনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়েছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ামককে আমরা এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। তার ভিতরে তাঁদের জানাতে হবে এই খারাপ ফলের কারণ কী? যদি তা জানাতে না পারেন, তাহলে ফের লাগাতার ঘেরাও করে রাখা হবে তাঁদের।” বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায় কোনও পরীক্ষক ইচ্ছাকৃত ভাবে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিকে, সোমবার বর্ধমানের পদ্মজা নাইডু মিউজিক কলেজের ছাত্রীরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী শাঁওলী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন, বহিরাগত পরীক্ষকেরা কলেজের প্রাকটিক্যালে তাঁদের নম্বর ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা ছাত্রীদের সিলেবাস বর্হিভূত প্রশ্ন করায় বেশিরভাগ ছাত্রীই অকৃতকার্য হচ্ছেন। ষোড়শীবাবু তাঁদের বলেন, “অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” |