বাড়ির কড়িকাঠে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন এক ধান ব্যবসায়ী। সোমবার তাঁর মৃত্যুর পরে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুললেন ধান ব্যবসায়ীরা।
বর্ধমানের গলসিতে পারাজ গ্রামের কাঞ্চন রুইদাস (৩১) নামে ওই যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল
কাঞ্চন রুইদাস |
বৃহস্পতিবার বিকেলে। বর্ধমান শহরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হলেও সোমবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা ও পুলিশ সুপার সৈয়দ হোসেন মির্জা জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। বিস্তারিত ‘রিপোর্ট’ মেলেনি।
কাঞ্চনের বাবা সুদন রুইদাসের অভিযোগ, “আমাদের জমি নেই। ছেলে ধান কেনাবেচার কাজ করে সংসার চালাত। গত তিন মাস কাজ বন্ধ। বিভিন্ন জনের কাছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল। বাধ্য হয়ে ও আত্মহত্যা করেছে।” রাজ্য ধান ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক প্রশান্ত লাহাও দাবি করেন, “ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সঙ্কট সামলাতে না পেরে উনি আত্মঘাতী হয়েছেন।”
কাঞ্চনের বাড়িতে তাঁর দু’টি নাবালিকা মেয়ে এবং অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রয়েছেন। স্থানীয় ধান-চালের ব্যবসায়ী হারাধন সাহা, দুঃখীরাম হাজরার খেদ, “গত সাত-আট বছর ধরে এই গ্রামে আমাদের মতো প্রায় দেড়শো পরিবারের মূল রুজিই হল ধান কেনাবেচা। নতুন সরকার এসে চালকলগুলিকে আমাদের থেকে ধান কিনতে বারণ করায় এক ছটাক ধানও বিক্রি হচ্ছে না। সকলেরই সংসার না চলার মতই অবস্থা।” তাঁদের দাবি, তাঁদের প্রতিটি আড়তে অন্তত ১০-১২ জন যুক্ত। তাঁরাও বেকার হয়ে গিয়েছেন। |
ধান ব্যবসায়ীদের দাবি, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সরকারি ধান কেনার কাজে তাঁদের সামিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই আশ্বাস পেয়ে গত নভেম্বরে ধমর্ঘটের কর্মসূচিও প্রত্যাহার করেন তাঁরা। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। প্রশান্তবাবু বলেন, “খাদ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষার আবেদন জানাব। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও যাব।” খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “ওঁদের থেকে ধান নিলে আমরা কেন্দ্রের অনুদান পাব না। তাই আমি বলেছিলাম, এ বছর ওঁদের সরকারি ধান সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় সামিল করা সম্ভব হবে না। আগামী বছর সমবায়গুলির সঙ্গে যুক্ত করে কাজ করানো যাবে।”
|