পানাগড়ে ওল্টাল অ্যাম্বুল্যান্স
মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন চালক, উঠছে অভিযোগ
কানে মোবাইল। চলছিল কথাবার্তা। আর সেই অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছিলেন চালক। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোগী নিয়ে উল্টে গেল অ্যাম্বুল্যান্সটি। জাতীয় সড়কের রোড ওভারব্রিজে ওঠার মুখে। এমনই অভিযোগ করেছেন রোগীর আত্মীয়স্বজন। সোমবার পানাগড়ের ঘটনা। জখম রোগী ও চালককে ভর্তি করানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে তীব্র গতিতে আসা একটি লরিকে জায়গা দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। রেললাইনের উপরে জাতীয় সড়কের রোড ওভারব্রিজে ওঠার মুখে উল্টে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে অসম থেকে আসানসোলে এক আত্মীয় বাড়িতে সপরিবার বেড়াতে এসেছিলেন রেলকর্মী স্বপন দাস। তাঁর স্ত্রী দীপাদেবী শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। প্রথমে তাঁকে ভর্তি করানো হয় আসানসোলের রেল হাসপাতালে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে ‘রেফার’ করা হয় শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে। এ দিন দুপুরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে দীপাদেবীকে নিয়ে স্বপনবাবু তাঁর ছেলে উজ্জ্বল ও আত্মীয় মালতি দাস রওনা দেন। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জাতীয় সড়কের ডান দিকে প্রায় ১৫ ফুট উঁচু থেকে উল্টে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। গাড়িটির ছাদের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। চালক নিজামুদ্দিনের হাতে ও পায়ে চোট লাগে। মাথায় চোট লাগে দীপাদেবীর। দু’জনেই প্রাথমিকভাবে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। মাথায় অল্প চোট পান স্বপনবাবুও। জায়গাটি কাঁকসা ও বুদবুদ থানার সংযোগস্থলে হওয়ায় দুই থানা থেকেই পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে চলে যান। জখম দীপাদেবী ও চালক মহম্মদ নিজামুদ্দিন, দু’জনকেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
—নিজস্ব চিত্র।
মালতিদেবী এবং উজ্জ্বলবাবুর অভিযোগ, “চালক মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পানাগড়ের রোড ওভারব্রিজে ওঠার মুখে হঠাৎ উল্টোদিক থেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে একটি লরি চলে আসে। হঠাৎ সামনে লরিটি চলে আসায় অ্যাম্বুল্যান্সের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। চালক মোবাইলে কথা বলছিলেন বলেই হয়তো দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হল আমাদের।”
মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোর ফলে এর আগেও একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার দুর্গাপুর শাখার কর্মকর্তা সমীর বসু জানান, গাড়ি চালানোর জন্য মনোসংযোগ খুবই জরুরি। মোবাইলে কথা বললে মনোসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে। একসঙ্গে দু’টি কাজ করতে গিয়ে চাপ পড়ে মস্তিষ্কে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “শুধু গাড়ি চালানোর সময়ই নয়। ব্যস্ত রাস্তায় হাঁটাচলা করা বা রেললাইন পারাপারের সময়ও মোবাইলে কথা বলা বিপজ্জনক।” এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের সময় তাঁরা এ বিষয়ে চালকদের সচেতন করা হয় বলেও জানান তিনি। বিপজ্জনক এই অভ্যাস দূর করতে সচেতনতা গড়ার উপর জোর দিয়েছেন দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অনিমেষ সিংহ সরকার। তিনি বলেন, “শুধু চালক নয়, যাত্রীদেরও সমান ভাবে সচেতন হতে হবে। চালক মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে যাত্রীদেরই তাঁকে নিষেধ করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.