মাঝরাতে দূরপাল্লার বাসে হঠাৎ উঠে দাঁড়াল ডাকাতেরা
দূরপাল্লার বাসে উঠে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। রবিবার গভীর রাতে কলকাতা থেকে হাজারিবাগ যাওয়ার একটি বাসে যাত্রী সেজে উঠেছিল পাঁচ দুষ্কৃতী। আসানসোল ও কুলটির মাঝে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে চলন্ত বাসে লুঠপাট শুরু করে তারা। ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে বাস থেকে নেমে পালানোর সময়ে এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন চালক। তাকে আটক করেছে পুলিশ। তার কাছ থেকে লুঠ হওয়া কিছু জিনিসও উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
কলকাতার বাবুঘাট থেকে রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের উদ্দেশে রওনা দেয় বাসটি। বাসকর্মী ও যাত্রীরা জানান, বর্ধমানে বাসে ওঠেন পাঁচ জন। প্রত্যেকে আলাদা ভাবে হাজারিবাগ যাওয়ার জন্য দেড়শো টাকা করে ভাড়াও মেটায় তারা। যাত্রীদের অভিযোগ, রাত পৌনে ১২টা নাগাদ ২ নম্বর জাতীয় সড়কে আসানসোল উত্তর থানা এলাকার টোল প্লাজা পেরোনোর পরেই উঠে দাঁড়ায় তারা। তিন জনের হাতে ছিল রিভলভার, দু’জনের হাতে ভোজালি। এক জন চালকের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে সোজা রাস্তায় বাস চালিয়ে যেতে বলে। অন্য এক জন কন্ডাক্টর যোগেশ কুমারকে বেঁধে মারধর করে। এর পরে যাত্রীদের থেকে প্রথমে মোবাইল ফোন, পরে টাকা, গয়না-সহ নানা জিনিসপত্র কেড়ে নেয় তারা। কয়েক জন যাত্রীকে মারধরও করে। বাসের যাত্রী, বর্ধমানের বাসিন্দা প্রশান্ত কুণ্ডু বলেন, “কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা আমার মোবাইল, সোনার আংটি কেড়ে নিল।” আর এক যাত্রী, বিএসএফ কর্মী বিকাশকুমার দুবের কথায়, “বাধা দিতে গেলে ওরা আমার মাথায় রিভলবারের বাঁট দিয়ে মারে।”
লুঠপাটের পরে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
চালক জিতেন্দ্র কুমার জানান, দুষ্কৃতীদের নির্দেশ মতো তিনি বাস চালাচ্ছিলেন। এক সময় বাসটি ডুবুরডিহি চেকপোস্ট পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের মাইথন চক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তখন আবার দুষ্কৃতীরা চালককে নির্দেশ দেয়, বাসটি ঘুরিয়ে ফের পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে হবে। জিতেন্দ্রবাবু বলেন, “আমি বাস ঘুরিয়ে ডুবুরডিহি চোকপোস্ট পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ি। এই সময়ে চেকপোস্টের কাছে একটি পুলিশের জিপ দেখে বাস থামিয়ে দরজা খুলে রাস্তায় ঝাঁপ দিই। চিৎকার করে লোক জড়ো করার চেষ্টা করি। বেগতিক বুঝে দুষ্কৃতীরা নেমে পালাতে যায়। তখনই এক জনকে ধরে ফেলি।” তিনি অভিযোগ করেন, আসানসোল টোল প্লাজা থেকে ডুবুরডিহি চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তায় কোথাও পুলিশের গাড়ি চোখে পড়েনি। তা দেখা গেলে অনেক আগেই গাড়ি থামাতে পারতেন বলে তাঁর দাবি। বাসের যাত্রী, ছানা ব্যবসায়ী ধরম কারক বলেন, “প্রায়ই এই বাসে যাতায়াত করি। আগে কখনও এমন হয়নি।”
লুঠপাটের খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ধরা পড়া দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়। জখমদের চিকিৎসার জন্য আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতের কাছ থেকে লুঠ হওয়া বেশ কিছু জিনিস মিলেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, দুষ্কৃতীরা সকলেই ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। সোমবার সকালে বাসের কন্ডাক্টার ও খালাসিকে নিজেদের হেফাজতে রেখে অন্য যাত্রীদের বাসে তুলে হাজারিবাগ রওনা করিয়ে দেয় পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.