জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই বছরের, ২০১২ সালের ক্যালেন্ডারে স্থান করে নিল কোচবিহারের দিনহাটার এক চিত্রশিল্পী রথীন্দ্রনাথ সাহার আঁকা দেশের ১২ জন মনিষীর মুখায়বের স্কেচ। ওই স্কেচের তালিকায় স্বামী বিবেকানন্দ, দয়ানন্দ সরস্বতী, জ্যোতিবা ফুলে, বিআর আম্বেডকর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজা রামমোহন রায়, মাদার টেরিজা, শ্রীনারায়ণ গুরু, বিনোভা ভাবে, মহাত্মা গাঁধী, বিরসা মুন্ডা এবং সুব্রমনিয়াম ভারতী আছেন। সম্প্রতি দিল্লি থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত ওই ক্যালেন্ডার দিনহাটার বাসিন্দা ওই শিল্পীর হাতে এসেছে। ক্যালেন্ডারে সাতটি পাতা রয়েছে। প্রথম পাতায় স্বামী বিবেকানন্দের ছবি রয়েছে। শেষ পাতায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপাসের্ন জাস্টিস কে জি বালকৃষ্ণণ-সহ পদাধিকারীদের নামের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। মাঝের পাতার পর্যায়ক্রমে দুইদিকে মাসের তারিখ ছাপা রয়েছে। ওই তারিখের ওপরে রয়েছে রথীন্দ্রনাথবাবুর আঁকা মনীষিদের মুখায়বের ছবি। ক্যালেন্ডারে ছবিগুলির শিল্পী হিসাবে রথীন্দ্রনাথ সাহার নামও মুদ্রিত রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহকারি তথ্য আধিকারিক উৎপল নারায়ণ অধিকারী বলেন, “আধুনিক ভারতের সমাজসংস্কারক মনিষীদের এবারে ক্যালেন্ডারের ছবির থিম হিসাবে বাছা হয়েছিল। আমরা বিভিন্ন মহল থেকে স্রেফ পেন্সিল স্কেচের ছবি চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। দিনহাটার বাসিন্দা রথীন্দ্রবাবুর ছবিগুলো ক্যালেন্ডারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।” |
কমিশন সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রতি বছর নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর শিল্পীদের আঁকা ছবি সম্বলিত ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে কমিশন। ওই ক্যালেন্ডার দেশের সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ছাড়াও প্রতিটি রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন, রাজ্যগুলির মুখ্যসচিব-সহ পদস্থ আধিকারিক, সুপ্রিম কোটর্র্, হাইকোর্টের বিভিন্ন মহলে পাঠানো হয়েছে। তাতে রথীন্দ্রবাবুর স্কেচ বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কমিশনের তরফে সাম্মানিকের পাশাপাশি রথীন্দ্রনাথকে শংসাপত্র দেওয়া হবে। দিনহাটার বলরামপুর রোডের বাসিন্দা রবীন্দ্রমোহন সাহার দুই ছেলের মধ্যে রথীন্দ্রবাবু বড়। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ছবি আঁকার হাতেখড়ি। দিনহাটায় তিনি কয়েকটি ছবি আঁকা শেখানোর স্কুল চালাচ্ছেন। ছবি আঁকার নেশাকে পেশা করেও নিয়ম করে পেন্সিল, রংতুলি নিয়ে ঘাম ঝরানোর অভ্যাসে খামতি রাখেন না। রথীন্দ্রবাবু বলেন, “পরিশ্রম তো রয়েছেই। খুব ভাল লাগছে। এই সাফল্য থেকে আরও পরিশ্রম, দায়িত্ব বেড়ে গেল। রথীন্দ্রবাবুর কৃতিত্বে খুশি দিনহাটা হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক শঙ্খনাদ আচার্য বলেন, “রথীন্দ্রবাবু আমাদের সংগঠনেরও সদস্য। জাতীয়স্তরে তাঁর এমন সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই আমরা গর্বিত। সংগঠনের তরফে ওঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।” |