|
|
|
|
|
দ্য জলকেলি রুম |
ঘরের আনাচকানাচ সাজিয়ে নিচ্ছেন অথচ বাথরুম ব্রাত্য?
কে বলল? রইল কিছু সাজেশন। পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায় |
বাড়ির যত্ন নিতে হলে শীতকালের চেয়ে ভাল সময় আর কিছু হয় না। নতুন বছরের শুরুতেই কলি ফেরানো দেওয়াল, রুখুশুখু হিমেল হাওয়ার সামনে উজ্জ্বল রঙের পর্দার প্রতিরোধ বা পা-ডোবানো তুলতুলে কার্পেটে ঢাকা মেঝে যেমন খুশি সাজে সাজানো যায় আপনার সাধের আস্তানাটিকে। কিন্তু বাড়ির বাথরুমটির কথা আমরা প্রতি বারই কেমন যেন বেমালুম ভুলে যাই। তৈরির পর থেকেই কখনওসখনও রঙের পোঁচ লাগানো ছাড়া তার অস্তিত্ব নিয়ে বড় একটা মাথা ঘামাই না। এই শীতে বরং হাল ফ্যাশনের অ্যাকসেসরিতে সাজিয়ে তুলুন স্বল্প পরিসরের জায়গাটিকে।
স্কোয়্যার ফিটের দিক থেকে বিচার করলে এখনকার বেশির ভাগ বাড়িতেই খেলিয়ে বাথরুম বানানোর সাহস পান না বাসিন্দারা। কিন্তু জায়গার অভাবে সাজসজ্জা আটকায় না। পুঁচকে বাথরুমেও শাওয়ার এনক্লোজার বা বাথটাব দিব্যি ধরে যায়। সবচেয়ে ভাল হয় একটা কোণ ঘিরে শাওয়ার এনক্লোজার বানিয়ে নিতে পারলে। এর সবচেয়ে সুবিধে হল, জল পড়ে বাথরুমের অন্য অংশ নোংরা হওয়ার ভয় থাকে না। খরচ বাঁচাতে চাইলে শাওয়ার এনক্লোজার আর শাওয়ার প্যানেল আলাদা কিনতে পারেন।
মোটামুটি তেরো-চোদ্দো হাজারের মধ্যেই শাওয়ার এনক্লোজার পেয়ে যাবেন। প্যানেলের দামও এর কাছাকাছি। সাধারণত শাওয়ার প্যানেলে ওভারহেড শাওয়ার বা রেন শাওয়ার, হ্যান্ড শাওয়ার, বডি জেট, বডি মাসাজ শাওয়ার-এর ব্যবস্থা থাকে। এর সঙ্গে অবশ্যই এনক্লোজারের মধ্যে লাগিয়ে নিন টাওয়েল স্ট্যান্ড, সোপ ডিসপেনসার আর লম্বাটে আয়না। তবে একটু বড়সড় বাথরুমে মাল্টিফাংশন শাওয়ার এনক্লোজার লাগালে এই সমস্ত সুবিধেই পেয়ে যাবেন। সঙ্গে উপরি পাওনা হিসেবে পেতে পারেন স্টিম বাথ-এর ব্যবস্থা, ভেন্টিলেশন আর এফ এম। তার দাম অবশ্য একটু বেশির দিকেই।
বাথরুম বড় হলে মার্বেল দিয়ে পছন্দ মতো বাথটাব বানিয়ে নিতেই পারেন। কিন্তু ছোট বাথরুমে ঢাউস বাথটাব একেবারে মানায় না। জায়গা বাঁচাতে লম্বাটে বা ঝিনুক আকৃতির টাব এখন বেশি চলছে। জাকুজি হলে অবশ্য দামটা একটু বেশির দিকেই পড়বে। ‘জাকুজি’ আসলে একটি সংস্থার নাম, যারা প্রথম হট টাব-এর ধারণাটির জন্ম দেয়। এতে হট বাথ নেওয়ার নেওয়ার সময় ওয়াটার জেট-এর সাহায্যে বডি মাসাজের ব্যবস্থা থাকে। গরম আর ঠান্ডা দু’ধরনের জলেরই ব্যবস্থা থাকে। একটা পাইপ লাগানো হয় গিজারের সঙ্গে, অন্যটি সাধারণ জলের লাইনের সঙ্গে। সঙ্গে থাকবে হ্যান্ড শাওয়ারের ব্যবস্থাও।
বেসিন কেনার সময় স্টোরেজ-এর ব্যবস্থা আছে কি না দেখে নেবেন। স্বচ্ছ কাচের বোল শেপ বেসিন এখন খুব চলছে। এর ওপর উজ্জ্বল রঙের জিয়মেট্রিক বা ফ্লোরাল মোটিফ দেওয়া থাকলে দেখতে ভাল লাগে। স্বচ্ছ কাচের বেসিনের সঙ্গে সবচেয়ে ভাল হয় কাউন্টার টপটিও স্বচ্ছ হলে। নীচের অংশে স্টোরেজের বদলে টুকিটাকি রাখার একটা লম্বা কাচের তাক আর সামনে ছোট্ট রডে তোয়ালে ঝোলানোর জায়গা। আর কী চাই! জায়গা বাঁচানোর জন্য কোনও একটা কোণে অর্ধবৃত্তাকার স্টোরেজ সহ বেসিনও বসিয়ে দিতে পারেন। স্টোরেজ-এর প্রয়োজন না থাকলে ছোট টেবিল টপ বেসিন কিনে ফেলুন। গ্র্যানাইট বা মার্বেলের কাউন্টার টপ অথবা স্টেনলেস স্টিল স্ট্যান্ড-এর ওপর বসিয়ে দিতে পারেন। ছোট্ট বেসিনের জন্য ‘সিঙ্গল লিভার বেসিন মিক্সার’ লাগানোই ভাল। এই ধরনের কলের লিভারটি এ পাশ-ও পাশ ঘুরিয়ে ঠান্ডা বা গরম জল পাওয়া যায়। সেন্টার হোল বেসিন মিক্সার-এর ক্ষেত্রে ঠান্ডা ও গরম জলের জন্য দু’পাশে দু’টি নব থাকে।
বাথরুমে ওভারসাইজড আয়না লাগানোর প্রবণতা এখন বেশ বেশি। কখনও সেটার আয়তন কাউন্টার টপের সমান, আবার কখনও কাউন্টার টপ ছাড়িয়ে একটা প্যানেল বরাবর বিস্তৃত। আয়তাকার আয়নার ওপরে মিরর লাইট আর গোল, ডিম্বাকৃতি বা লম্বাটে আয়নার দু’দিকে দুটো ল্যাম্প শেড লাগানো যেতে পারে।
বাথরুমের মেঝের জন্য অ্যান্টি-স্কিড টাইল বেছে নিন। এই ধরনের টাইল একটু খরখরে হয় বলে চট করে পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ভিনাইল টাইলের ফ্লোরিংও অনেক দিন চলে। একটু অভিনবত্ব আনতে দেওয়ালের একটা অংশে ছোট ছোট রঙিন গ্লাস টাইলও বসাতে পারেন। |
|
|
|
|
|