|
|
|
|
‘চেক’ আটকে হাল ফিরল শিশুবিভাগে |
গৌর আচার্য • রায়গঞ্জ |
প্রবল ঠান্ডাতেও হাসপাতালের শিশু বিভাগের ভাঙা জানালা আর মেরামত হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারের পাঠানো ‘চেক’ আটকে দিয়ে তিন দিনের মধ্যে সেই কাজ করিয়ে নিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে। মঙ্গলবার রোগী কল্যাণ সমিতির প্রায় ৬০ হাজার টাকার সরকারি বিল বাবদ একটি ‘চেক’ উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-১ গৌতম ঘোষের কাছে যায়। গৌতমবাবু চেকগুলিতে সই না করে স্বাস্থ্যকর্মীদের ফিরিয়ে দেন। তিনি জানান, হাসপাতালের শিশু বিভাগের একাধিক জানালার কাঁচ দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রচণ্ড শীতে শিশুরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। তাই জানালাগুলিতে নতুন কাঁচ না লাগানো পর্যন্ত তিনি কোনও চেকে সই করবেন না। রোগী কল্যাণ সমিতির নিয়মে সম্পাদক তথা হাসপাতাল সুপার ও উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সই ছাড়া কোনও বিল পাশ হয় না। উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ওই মনোভাবের কথা জানার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুক্রবার শিশু বিভাগের জানালাগুলিতে নতুন কাঁচ লাগাতে বাধ্য হন। গৌতমবাবু দাবি করেন, “দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শিশুবিভাগে জানালার কাঁচ লাগানোর কথা বললেও তাঁরা আমল দেননি। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগী কল্যাণ সমিতিকে চাপ দিয়ে শিশু বিভাগের একাধিক জানালায় নতুন কাঁচ লাগানো হল। দু-একদিনের মধ্যে সমিতির বিভিন্ন চেকে সই করে দেব।” তিনি দাবি করেন, রোগী কল্যাণ কমিটির বিল আটকে দেওয়ার সঙ্গে শিশু বিভাগে কাঁচ লাগানোর কোনও সম্পর্ক নেই। সোমবার রাতে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে হইচই শুরু হয়। মঙ্গলবার দুপুরে শিশু বিভাগের কর্তব্যরত নার্সদের একাংশও জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে শিশু বিভাগের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগ জানান। তার মধ্যে জানালার ভাঙা কাঁচের বিষয়টিও ছিল। এর পরেই এ দিন বিকালে স্বাস্থ্যকর্মীরা কমিটির বিলের একাধিক চেক উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে সই করানোর জন্য নিয়ে গেলে উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহকারী সুপার গৌতম দাসকে ফোন করে জানিয়ে দেন, শিশু বিভাগের জানালায় নতুন কাঁচ না লাগানো পর্যন্ত তিনি চেকে সই করবেন না। সহকারী সুপার বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নির্দেশে শিশু বিভাগের জানালায় কাঁচ লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে।” ভারপ্রাপ্ত সুপার সোমনাথবাবু জানান, কাঁচ লাগানোর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চেকগুলিতে সই করে দেবেন বলে জানান।
কমিটির কার্যকরী সদস্য তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকার বলেন, “নতুন সমিতি গঠন হয়েছে। তাই বর্তমানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সমিতির নানা কাজ পরিচালনা করছেন। জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর শিশু বিভাগের সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। |
|
|
|
|
|