অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে টালবাহানা
কটি অ্যাম্বুল্যান্স ‘অনৈতিক’ ভাবে ভাড়া খাটানোর অভিযোগ উঠেছে হরিপালের অলিপুর-কাশীপুর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বার বার অ্যাম্বুল্যান্সটি হস্তান্তর করতে চেয়েও তা পারা যায়নি বলে অভিযোগ।
সাংসদ কোটার টাকায় কেনা একটি অ্যাম্বুল্যান্স প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয় হুগলির হরিপালের অলিপুর-কাশীপুর পঞ্চায়েতকে। ‘শর্ত’ ছিল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সেটি তুলে দেবেন স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। ওই সংস্থাই অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাবে, রক্ষণাবেক্ষণ করবে। কিন্তু, কয়েক মাস কেটে গেলেও পঞ্চায়েত গাড়িটি ওই সংস্থাকে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্টে তারাই ‘অনৈতিক’ ভাবে গাড়িটি ভাড়া খাটাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা অবিলম্বে গাড়িটি হস্তান্তরের নির্দেশ দিলেও পঞ্চায়েত প্রধান তা উপেক্ষা করছেন বলে অভিযোগ।
মহকুমাশাসক (চন্দননগর) অভিজিৎ মিত্র বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্সটি ওই সংস্থার হাতেই তুলে দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। সমস্যা মিটে যাওয়ার জায়গায় আছে। যদি কোনও ভাবে তা না হয়, সে ক্ষেত্রে জেলাশাসক গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে সংশ্লিষ্ট সংস্থার হাতে তুলে দেবেন। কেন না, গাড়িটি সরকারি সম্পত্তি।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, অলিপুর-কাশীপুর পঞ্চায়েতের নৈটি গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রামবাসীদের সুবিধার্থে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার আবেদন করেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ সৈয়দ মালিয়াবাদীর কাছে। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে মালিয়াবাদী তাঁর সাংসদ কোটা থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। নিয়ম অনুযায়ী, সাংসদ তহবিলের টাকা সরাসরি কোনও বেসরকারি সংস্থার (নন গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন বা এনজিও) হাতে দেওয়া যায় না। এই অবস্থায়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় স্থির হয় অলিপুর-কাশীপুর পঞ্চায়েতকে অ্যাম্বুল্যান্সটি দেওয়া হবে। প্রধান সেটি তুলে দেবেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। সংস্থাটিই রোগী আনা-নেওয়ার কাজ করবে। গত সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় সাংসদ তহবিলের টাকায় অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সটি কেনা হয়।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী অ্যাম্বুল্যান্সটি তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান তা করছেন না। গাড়িটি পঞ্চায়েতে সংলগ্ন একটি বাড়ির সামনে রাখা হয়েছে। এমনকী, ‘অনৈতিক’ ভাবে ভাড়াও খাটানো হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের সবর্স্তরে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে সংস্থাটির তরফে।
সাংসদ মালিয়াবাদী নিজেও এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন জেলা প্রশাসনের কাছে। এর পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে জেলাশাসক স্বয়ং সকলেই দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানকে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্সটির পরিষেবার দায়িত্বে থাকবে আমাদের সংগঠন, এমনই চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু গাড়িটি হাতে পেয়ে প্রধান এখন উল্টো গাইছেন। অনৈতিক ভাবে অ্যাম্বুল্যান্সটি আটকে রাখা হয়েছে। দেদার ভাড়া খাটানো হচ্ছে। পঞ্চায়েত প্রধান প্রশাসনের কথাও শুনছেন না।” তাঁর বক্তব্য, “পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না এত দিন। আমরা দৌড়ঝাঁপ করে ব্যবস্থা করলাম। আমাদের সেটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”
অলিপুর-কাশীপুর পঞ্চায়েত সিপিএম পরিচালিত। তৃণমূল অভিযোগ তুলেছে, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবেই অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রাখা হয়েছে। হরিপালের তৃণমূল নেতা তুষার সিংহরায় বলেন, “বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। মানুষের কাছে বিতারিত হয়েও, সিপিএম যে শোধরায়নি, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।” পঞ্চায়েত প্রধান সুফল মাণ্ডির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় বার বার ফোন করা হলেও ফোন তোলেননি।
হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএম নেতা দীনবন্ধু কোলে বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্সটি শুক্রবারেই দিয়ে দেওয়া হত। বিডিও এবং জয়েন্ট বিডিও মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় তা হয়নি। দু’এক দিনের মধ্যেই ওই সংস্থার হাতে অ্যাম্বুল্যান্স তুলে দেওয়া হবে।” তৃণমূলের তোলা অভিযোগ মানেননি সিপিএম নেতৃত্ব।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.