জমি দখল করে বিক্রি, মামলা রুজু পুলিশের
ক দিনমজুরের আড়াই বিঘা জমি দখল করে বিক্রির অভিযোগে কংগ্রেস পরিচালিত মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৌসুমী বাগের স্বামী স্যামুয়েল বাগ ওরফে টাইগারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মাটিগাড়া থানার পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নেহালুজোত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগকারীর নাম বিদ্যাধর সিংহ। প্রায় দেড় দশক ধরে তিনি টাইগারের ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এমনকী, বিদ্যাধর সিংহের কাছ থেকে সাড়ে তিন বিঘা জমি কিনেই ইটভাটা তৈরি করেছিলেন টাইগার। বিধ্যাধরবাবুর অভিযোগ, গত বছর টাইগার ভাটা তুলে দিয়ে সমস্ত জমি বিক্রি করে দেন। সে সময়ে গ্রামের এক বাসিন্দার সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ মেটাতে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার নাম করে শিলিগুড়ি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে কাগজপত্রে টিপ ছাপ দেওয়ানো হয় বলেও অভিযোগ। কয়েক মাস পরে গ্রামের লোকেদের পরামর্শে খোঁজ নিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর আড়াই বিঘা জমি বিক্রির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি শশীকান্ত গুপ্ত নামে এক ব্যক্তির নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এমনকী, ওই জমি শশীকান্ত গুপ্ত দুই ব্যক্তিকে বিক্রিও করে দিয়েছেন। বিদ্যাধরবাবু বলেন, “আমি লেখাপড়া জানি না। টাইগারের কাছে এতদিন কাজ করেছি। সেই বিশ্বাসে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সই করেছিলাম। পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি।” শশীকান্ত গুপ্তকে তিনি চেনেন না বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যাধরবাবু। বিদ্যাধরবাবু মাটিগাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরে পুলিশ টাইগার, শশীকান্ত গুপ্ত ছাড়াও শিলিগুড়ি আদালতের এক আইনজীবী পূজা ছেত্রীর নামে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তদের সমন পাঠানোর পাশাপাশি শিলিগুড়ি সাব রেজিস্ট্রি অফিসের এডিএসআফ নিমা শেরপাকেও জেরা করেছে। স্যামুয়েল বাগ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “১৯৯৪ সালেই ওই আড়াই বিঘা জমি আমি বিদ্যাধর সিংহের কাছ থেকে কিনেছি। জমিতে নামজারি হয়নি বলে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করাতে হয়। তৃণমূলের চক্রান্তে বিদ্যাধরবাবু এমন ভুয়ো অভিযোগ করছেন।” অন্যদিকে, বাগডোগরা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মহুরি হিসাবে পরিচিত শশীকান্ত গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, “স্যামুয়েলের অনুরোধে ওই জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আমার নামে করানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছিলাম। এর বাইরে কিছু জানি না। জমি কে বিক্রি করেছে তাও বলতে পারব না।” তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মাটিগাড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “দল নেত্রীর নির্দেশেই আমরা জমি সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে কেউই জড়াই না। এ ক্ষেত্রেও আমাদের ভুমিকার প্রশ্ন নেই। টাইগার যে এলাকার দরিদ্র কৃষকের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন সেটা সকলেই জানেন। আমরাও চাই পুলিশ ব্যবস্থা নিক।” বিদ্যাধরবাবুর আইনজীবী পৃত্থীশ বড়ুয়ার প্রশ্ন, ১৯৯৪ সালে জমিটি স্যামুয়েল কিনে থাকলে নামজারি সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে কেন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে হল? তিনি বলেন, “বিদ্যাধরবাবুর জমি বাগডোগরা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অধীনে। শিলিগুড়িতে কেন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করা হল? সেখানে বিদ্যাধর সিংহকে প্রধাননগরের বাসিন্দা হিসাবে দেখানো হয়েছে। আদালতে এসব প্রশ্ন উঠবেই।” সিপিএমের পাথরঘাটা লোকাল কমিটির সম্পাদক হীরালাল ছেত্রী বলেন, “বিদ্যাধরের ঘটনাটি জানার পরেও টাইগারকে দেখা করতে বলেছিলাম। উনি আসেননি। তবে এই ধরনের অন্যায় আমরাও চুপচাপ মেনে নেব না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.