স্বরূপনগরে গুলি, দুষ্কৃতীদের হাতে খুন তৃণমূল নেত্রী
ততায়ীদের গুলিতে খুন হলেন স্বরূপনগর এলাকার এক তৃণমূল নেত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় সগুনা পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর গ্রামে বাড়ি ফেরার পথে সাগরিকা মণ্ডল (২৮) নামে ওই মহিলাকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান সাগরিকা। পক্ষান্তরে, বুধবার রাতে কৃষ্ণনগরে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন তৃণমূলেরই স্থানীয় এক কাউন্সিলর।
এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার শুক্রবার বলেন, “সাগরিকা মণ্ডল হত্যার ঘটনায় এক জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদেরও ‘চিহ্নিত’ করা গিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে নাম বলছি না।” সাগরিকাদেবী একশো দিনের কাজের স্থানীয় প্রকল্পের সুপারভাইজার ছিলেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই প্রকল্পে কাজ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই এই খুন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য এই খুনের পিছনে সরাসরি ‘সিপিএম-আশ্রিত সমাজবিরোধী’দের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

সাগরিকা মণ্ডল
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্থানীয় বিধায়ক বীণা মণ্ডলেরা এ দিন যান সাগরিকাদেবীর বাড়িতে। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর দাবি, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে সন্ত্রাস ছড়াতে চাইছে সিপিএম।” চন্দ্রিমাদেবীর অভিযোগ, “এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। মহিলাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতেই সিপিএম আমাদের এক দক্ষ সংগঠককে এ ভাবে খুন করল।” স্থানীয় সিপিএম নেতা হামালুদ্দিন আহমেদ অবশ্য বলেন, “এটা ওদের দলীয় কোন্দলের জের। এর সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরাও চাই, দোষী অবিলম্বে গ্রেফতার হোক।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে রান্না করছিলেন সাগরিকাদেবী। পাশে বসে পড়ছিল তাঁর ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অর্পণ। অর্পণ বলে, “মা দরজার দিকে পিছন ফিরেছিল। হঠাৎ দেখি, দরজা ফাঁক করে একটা লোক বন্দুক হাতে ঢুকছে। আমি চিৎকার করে মাকে ডাকি। মা ফিরে তাকাতেই লোকটা গুলি চালাল।” পুলিশ জানিয়েছে, গুলি লাগে সাগরিকাদেবীর বাঁ দিকের পাঁজরে। উনুনের উপরে মুখ থুবড়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পাশের ঘরে ছিলেন সাগরিকার শাশুড়ি রঞ্জিতাদেবী ও স্বামী শিবপদ। শব্দ শুনে ছুটে আসেন তাঁরা। কিন্তু ততক্ষণে পালিয়ে যায় আততায়ীরা। পুলিশ জানতে পেরেছে, মোটরবাইকে চেপে তিন যুবক এসেছিল। গুলি চালিয়ে তারা শাঁড়াপুলের রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়।
কৃষ্ণনগর পুরসভায় ৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা পার্থ সেন (৪০) হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হলেন কৃষ্ণনগর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলর দেবানন্দ শর্মা। বুধবার রাতে কৃষ্ণনগরের কাঁসারিপাড়ায় পার্থবাবুর উপরে হামলার ঘটনাতেই আহত হন সমীর বিশ্বাস নামে আর এক তৃণমূল কর্মী। কাউন্সিলর দেবানন্দ শর্মা-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দেবানন্দবাবুর বাবা তথা স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ শর্মার দাবি, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর দত্ত তাঁর ছেলেকে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা করছেন। গৌরীবাবুর প্রতিক্রিয়া, “সব কথার উত্তর দিতে নেই।” পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছ থেকেই ধরা হয় দেবানন্দবাবুকে। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমন মিশ্র বলেন, “স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর গণ্ডগোলের জেরেই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ওই কাউন্সিলরকেও ধরেছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.