|
|
|
|
|
|
 |
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
তৃতীয় ভূমি তৈরি হল, হারিয়েও গেল |
আচার্য সুশীলকুমার দে-র বাংলা প্রবন্ধগুলি অধিকাংশই অগ্রন্থিত। দু’টি গ্রন্থ দীনবন্ধু মিত্র ও নানা নিবন্ধ বহু দিন দুষ্প্রাপ্য। গ্রন্থ দু’টির সঙ্গে আরও কিছু প্রবন্ধ সংযোজিত করে প্রকাশিত হয়েছে নানা নিবন্ধ ও অন্যান্য প্রবন্ধ (সংকলন ও ভূমিকা: অলোক রায়, পারুল, ২৫০.০০)। বিদ্যাকে যাঁরা কক্ষবদ্ধ করতে চাননি, তাঁদের অন্যতম এই মনীষীর রচনা সুলভ হওয়া নিশ্চয়ই আনন্দের।
পরিমল ভট্টাচার্য তাঁর বইয়ের নাম দিয়েছেন সত্যি রূপকথা (অবভাস, ১৮০.০০)। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘ক্লিশে’, শিরোনামটি সেই গোত্রের। কিন্তু সেটিকে সার্থক করে তুলেছেন পরিমলবাবু। ওড়িশার নিয়মগিরি পর্বতের আশ্রয়ে বহু কাল ধরে বেঁচে থাকা জনজাতির মানুষ এক দিন তছনছ হয়ে যেতে শুরু করল, তার কারণ সেখানে বক্সাইটের ভাণ্ডার নিহিত, আর বক্সাইট মানেই অ্যালুমিনিয়াম, সুতরাং বহুজাতিক খনি কোম্পানি, সুতরাং... জনজাতির জীবনধারা, বিশ্বাস, উপকথাকে এই ‘উন্নয়ন’-এর পাশে রেখে অসামান্য মুনশিয়ানায় এক বৃত্তান্ত রচনা করেছেন পরিমলবাবু। উপসংহারে লিখেছেন, ‘দেশের বুকের মাঝে এই এক দেশ, যা নিজেকে ছিঁড়ে নিয়েছে। আরও অনেকগুলো দেশ ছেঁড়া হয়ে চলেছে অবিরত।’
‘চতুর্থ ভূমি’র কথা লিখেছেন শুভেন্দু দাশগুপ্ত। প্রশাসন আর রাজনৈতিক দল যদি প্রথম দুটি ভূমি হয়, তবে তৃতীয় ভূমি হল যাকে আমরা ‘নাগরিক সমাজ’ বলে চিনেছিলাম। আমরা দেখেছি, পশ্চিমবঙ্গে ‘এই তৃতীয় ভূমি তৈরি হল এবং অবলুপ্ত হল।’ তার এই হারিয়ে যাওয়ার সমান্তরাল প্রক্রিয়ায় জন্ম নিল চতুর্থ ভূমি আদিবাসী, বনবাসী, সমুদ্রোপকূলবাসী ধীবর ইত্যাদি নানা গোষ্ঠী, যাদের নিয়ে অন্য তিন ভূমি ভাবে না, কিংবা যারা তাদের ভাবনার জগতেও অন্ত্যেবাসী। এই প্রান্তিক এবং ক্রমাগত মার-খাওয়া মানুষের ক্রমাগত মার খেয়ে চলার কাহিনি আর তাদের অধিকারসচেতন হয়ে ওঠার কথা ও কাহিনির সঙ্কলন অ-উন্নয়নের ৩৫ কাহন (মনফকিরা, ১০০.০০)।
যোগেশচন্দ্র বাগলের ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা লেখকের দীর্ঘ গবেষণার ফসল এবং আকরগ্রন্থ হিসাবে সুপরিচিত। ১৯৪১-এ প্রথম প্রকাশিত বইটি দীর্ঘ দিন ধরেই দুষ্প্রাপ্য ছিল, এ বার তা পুনঃপ্রকাশ করল বিবেকানন্দ বুক সেন্টার (পরিচায়িকা: নিমাইচন্দ্র পাল, ৪৫০.০০)।
‘অসুবিধার জন্য দুঃখিত, আমরা পৃথিবীটাকে পালটানোর চেষ্টা করছি।’ ‘ওয়াল স্ট্রিট দখল’ আন্দোলনের অনেক পোস্টারের একটি। ১ শতাংশ ক্ষমতাবানের আধিপত্য আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ৯৯ শতাংশের অহিংস প্রতিবাদের কিছু নথি আর কিছু ছবি নিয়ে একটি ছোট্ট সঙ্কলন ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ (৬০.০০) প্রকাশ করেছে কলকাতার ‘কনটেক্সট রিগ্রুপ’ সংস্থা। আন্দোলনের প্রস্তুতি ও প্রসারের ধারাবিবরণীর পাশাপাশি আছে নোয়াম চমস্কি, নাওমি ক্লাইন, স্লোভোস জিজেক প্রমুখ চিন্তানায়কদের মতামত। মনে রাখার মতো বিপদসঙ্কেত জারি করেছেন জিজেক: “আমরা এখানে দারুণ একটা সময় কাটাচ্ছি। কিন্তু মনে রাখবেন, কার্নিভাল খুব সস্তা ব্যাপার। আসল কথা হল পরের দিনটা, যখন আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ফিরে যাব। তখন কি কিছু পালটাবে?’ এটাই প্রশ্ন। আমাদের সকলের জন্য।
দেবাশীষ দাস প্রতিবন্ধী, কিন্তু প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে সে এখন রোজনামচা লেখে, গল্প-কবিতা লেখে, অঙ্কও করতে পারে। তাঁর অনুভূতিময় লেখাগুলি নিয়ে বেরিয়েছে আমার মনের কল্পনা ও আশা (মাল্টি বুক্স্; প্রাপ্তিস্থান: উজ্জ্বল সাহিত্য মন্দির, কে-২/১ মার্কাস স্কোয়ার, ৫০.০০)। |
|
|
 |
|
|