অশোকনগরের আইএনটিইউসি কর্মী দীপক আচার্য খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বুধবার রাতে তাঁর দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম বিক্রম পাল এবং সুখেন্দ্র সরকার ওরফে পিন্টু। পুলিশের দাবি, জমি বিক্রির দালালির ভাগের টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে খুন করা হয় দীপককে। সে কথা জেরায় ধৃতেরা কবুলও করেছে। বিক্রমের বাড়ি স্থানীয় শক্তিনগর এলাকায়। সে দীপকের প্রতিবেশী। পিন্টু পাশের খ্রিস্টানপাড়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারাসত জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ওই খুনের ঘটনায় আরও এক জনের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তার খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। গত রবিবার সকালে অশোকনগরের খরের মাঠ এলাকার একটি ধানখেত থেকে দীপকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সময়ে আইএনটিইউসি দাবি করেছিল, খুনের পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, দীপক, বিক্রম ও পিন্টু জমির দালালি করতেন। কয়েক মাস আগে গুমা এলাকার ৬ বিঘা একটি জমি তাঁরা বারাসতের এক বাসিন্দার কাছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। সেই টাকা বিক্রমের কাছে ছিল। জমি বিক্রির দালালি বাবদ দীপকের ভাগে পড়ে দেড় লক্ষ টাকা। কিন্তু বিক্রমের কাছে সেই টাকা চেয়েও তিনি পাননি। এ নিয়ে বিক্রমের সঙ্গে দীপকের বিবাদও হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ গুমা প্ল্যাটফর্মে আসেন দীপক ও বিক্রম। তাঁদের সঙ্গে আরও দু’জন ছিল। সেখানে মদ্যপানের পরে তারা পাশের শ্মশানে গিয়ে কালীপুজোর খিচুড়ি খায়। এর পরে পিন্টু এবং আরও এক জনকে ডেকে নেয় বিক্রম। সঙ্গীদের সহযোগিতায় রাস্তায় নিজের মাফলার দিয়ে দীপকের গলায় ফাঁস দেয় বিক্রম। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে নাইলনের দড়ির ফাঁসও দেওয়া হয় দীপকের গলায়।রবিবার মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৩০ মিটার দূরে একটি মাফলারের টুকরো পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ তা উদ্ধার করে। সেই সময়ে মৃতদেহকে ঘিরে ভিড়ের মধ্যে বিক্রমও ছিল। পুলিশ মাফলারের টুকরোটি উদ্ধার করতেই সে সেখান থেকে সরে পড়ে। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় মাফলারের টুকরোটি বিক্রমের। ময়না-তদন্তের পরে দেহটি শ্মশানে সৎকারের সময়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও বিক্রম ও পিন্টু ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। পিন্টু রবিবার সকালেই অন্যত্র চলে যায়। পরে অবশ্য ফিরে আসে। মঙ্গলবার খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে এলাকার বাসিন্দারা অশোকনগর থানায় স্মারকলিপি দেন। সেই ভিড়েও বিক্রম ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের অনুমান, তাদের চোখে ধুলো দিতেই বিক্রম স্মারকলিপি দিতে এসেছিল। |