রেলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল বাসন্তী থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাসন্তীর কুলতলি থেকে প্রণব মণ্ডল নামে ওই যুবককে ধরে পুলিশ। তার বাড়ি গোসাবার বিপ্রদাসপুরে। পুলিশের দাবি, ধৃত প্রণব টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। সোমবার থেকে সে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রামের কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রণব দীর্ঘদিন ধরে বাসন্তী ও গোসাবা এলাকার বহু যুবককে রেলে চাকরি করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। বেশ কয়েক জনকে চাকরির ভুয়ো নিয়োগপত্রও দিয়েছেন। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে কয়েক জন রেলের বি আর সিংহ হাসপাতালে ‘মেডিক্যাল টেস্ট’ও দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সম্প্রতি কয়েক জন যুবক প্রণবের কথা মতো রেলের প্রশিক্ষণের জন্য ধানবাদে যান। কিন্তু গিয়ে তাঁরা শোনেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আসেনি। এর পরে তাঁরা ফিরে শিয়াদহের ডিআরএমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরেই প্রতারিত হওয়ার কথা জানতে পারেন। কিন্তু ফিরে গিয়ে তাঁরা আর প্রণবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। গত ২৩ জানুয়ারি প্রতারিত যুবকদের মধ্যে এক জন কলকাতার সায়েন্স সিটির কাছে প্রণবকে দেখতে পান। তিনি তাঁকে বাসন্তী নিয়ে আসেন এবং টাকা ফেরত চান। কিন্তু সোমবার থেকে প্রণব না ফেরায় তাঁকে অপহরণ করা হয় বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রণবের মা সন্ধ্যাদেবী। বৃহস্পতিবার কুলতলির কয়েক জন প্রতারিত যুবক প্রণবকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
প্রতারিত যুবকদের মধ্যে কুলতলির অভিজিৎ বৈদ্যের স্ত্রী রমার দাবি, “বি আর সিংহ হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্টের পরে আমরা স্বামী কল্যাণী নর্থ কেবিনে যোগ দিয়েছিলেন। পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক সবই দেওয়া হয়। এক মাসের মাইনে, পে-স্লিপও পান। তার পরে স্বামী ধানবাদ থেকে ফেরার পরে শুনি চাকরিটা ভুয়ো।” পুলিশ জানায়, বাসন্তীর মানিক নস্করের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রণবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্ধ্যাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অপহরণের মামলাও শুরু হয়েছে। শুক্রবার ধৃত বলে, “চাকরি দেওয়ার জন্য আমি টাকা নিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু গ্রামবাসীরা যে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছি বলছেন, তা ঠিক নয়। সব মিলিয়ে আমি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছি।”পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “রেলে চাকরির নামে কেউ যাতে প্রতারিত না হন, তার জন্য আমরা প্রচার ও নজরদারি চালাই। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে।”র ছায়া নেমে এসেছে। |