নাতির মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হৃদরোগে মারা গেলেন ঠাকুমাও
যুবকের দেহ পুকুরে, খুনের নালিশ থানায়
পিকনিক সেরে ফেরার পথে কয়েক জনের সঙ্গে বচসা বেধেছিল। তার জেরে দুই যুবককে মারধর করা হয়। পর দিন পুকুর থেকে মেলে এক জনের দেহ। জখম আর এক জন কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে চার জনের বিরুদ্ধে। মৃতের পরিবারের দাবি, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় মারধর করা হয় ওই দু’জনকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনাখাঁর আবাদ মালঞ্চ গ্রামের কাছে বাড়ি সালাউদ্দিন মোল্লার (২৫)। তাঁর একটি মোবাইল ফোনের দোকান আছে। বাবা আয়ুব আলি মোল্লা সিপিএমের স্থানীয় নেতা। বৃহস্পতিবার সকালে তিনটি বাইকে চেপে সালাউদ্দিন ও তাঁর আরও পাঁচ জন বন্ধু হাসনাবাদের টাকিতে গিয়েছিলেন পিকনিক করতে। রাতে বসিরহাটে ফিরে সকলে সিনেমা দেখেন।
সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন। ভেবিয়া চৌমাথায় একটি দোকানে কেনাকাটা করছিলেন সকলে। সে সময়ে স্থানীয় কয়েক জন যুবক তাঁদের কাছে টাকা-পয়সা চায় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা বেধে যায়। গোলমাল বাড়তে থাকায় সালাউদ্দিন ও তাঁর সঙ্গীরা বাইক নিয়ে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন। পিছু ধাওয়া করে ওই যুবকেরা। রাজাপুর গ্রামের কাছে সালাউদ্দিনদের বাইকটি খারাপ হয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আমানুল্লা মোল্লা নামে এক জন। দু’জনকে ধরে ফেলে লাঠি, রড দিয়ে মারধর শুরু করে ওই যুবকেরা। কোনও মতে পালিয়ে কাছেই একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন আমানুল্লা।
সেখান থেকে মোবাইলে খবর দেন গ্রামে। প্রতিবেশী, আত্মীয়েরা এসে আমানুল্লাকে ওই রাতেই ভর্তি করেন মিনাখাঁ হাসপাতালে। পরে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতায়। কিন্তু ওই রাতে খোঁজ মেলেনি সালাউদ্দিনের। শুক্রবার সকালে রাজাপুর গ্রামের কাছে চৈতল রোডের পাশে একটি পুকুরে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সালাউদ্দিনের গ্রাম থেকে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ভেবিয়া চৌমাথা-মালঞ্চ রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গেও একপ্রস্থ বচসা, ধাক্কাধাক্কি বাধে জনতার। পরে পুলিশ কর্তারা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। দেহ পাঠানো হয় ময়না-তদন্তের জন্য।
চার জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন সালাউদ্দিনের পরিবারের লোকজন। তাঁর দাদা আলাউদ্দিন বলেন, “রাতে পুলিশ ভাইয়ের মোটর বাইক উদ্ধার করলেও ওর খোঁজ করেনি। সকালে যখন খবর দেওয়া হল দেহ ভাসছে জলে, তখনও অনেক দেরিতে এসেছে। ভাইয়ের গলায় সোনার চেন, হাতে আংটি ছিল। সে সব খোওয়া গিয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে বেশ কিছু নগদ টাকাও ছিল। সে সবও নেই” আলাউদ্দিনের দাবি, টাকা-পয়সা ছিনতাই করতে চেয়েছিল মুরারিশা গ্রামের কয়েক জন। সালাউদ্দিনেরা তা দিতে না চাওয়ায় বচসা বাধে।
বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। সালাউদ্দিনের সঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছিনতাইয়ের উদ্দেশে গোলমালের সূত্রপাত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মারামারির পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা, তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।” এ দিকে, সালাউদ্দিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁকে দেখতে মঠবাড়ি থেকে মোহন আবাদপুরে আসেন তাঁর ঠাকুমা মরিয়ম বিবি (৫৫)। হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিৎসক আসার আগেই মারা যান ওই প্রৌঢ়া। একই পরিবারে পর পর দুই মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.