বিষাক্ত চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বার সওয়াল শুরু হল কলকাতা হাইকোর্টে। সংগ্রামপুরে বিষমদে ১৭৬ জনের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণকে কেন্দ্র করে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চে তারই সওয়াল শুরু হয়েছে।
ওই জনস্বার্থের মামলায় আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, বিষমদ খেয়ে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে সরকার ঘোষণা করেছে। পুরো টাকাটাই দেওয়া হবে সরকারি কোষাগার থেকে। আমজনতার করের টাকা থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দিয়ে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। যত বার এমন ঘটনা ঘটবে, তত বারই সরকারি কোষাগার থেকে এই ভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাই কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে পৃথক তদন্ত করুক হাইকোর্ট। সংগ্রামপুরের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার দুর্ঘটনা খাতে ওই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সুব্রতবাবু বলেন, একটি অপরাধ চক্র অত্যন্ত সংগঠিত ভাবে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় চোলাই মদের ব্যবসা চালাচ্ছে। রাজ্যের আবগারি দফতর ও প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া এত বড় ব্যবসা চলতে পারে না। অথচ সরকার এই অপরাধের তদন্তে খুব তৎপর বলে মনে হচ্ছে না। তাই হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হোক। কারণ ওই ব্যবসা চলতে থাকলে সংগ্রামপুরের মতো ঘটনা বারবার ঘটবে।
রাজ্য সরকারের পক্ষে রাজ্যের জি পি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মৃত্যু এক বা একশো, সেটা প্রশ্ন নয়। যে-কোনও মৃত্যুই বেদনাদায়ক। কিন্তু এই ধরনের একটি সংগঠিত অপরাধ চক্র রাতারাতি গজিয়ে উঠতে পারে না। এই সরকারের এখনও এক বছর পার হয়নি। এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করার জন্য বর্তমান সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তদন্তও চলছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল প্রশ্ন তোলেন, ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করবে কেন? তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ অভিপ্রেত নয়। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নীতি বা কোন ক্ষেত্রে তা দেওয়া হবে, সেটা স্থির করার দায়িত্ব বিধানসভার। প্রধান বিচারপতি পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ফের মামলাটির শুনানি হবে। সে-দিন হাজির থাকতে হবে সরকার, আবগারি এবং অন্য সব পক্ষকেই। সব পক্ষের কাছে মামলার প্রতিলিপি পাঠানোর জন্য আবেদনকারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। |