|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা
নেই পরিষেবা |
উপেক্ষার ধোবি ঘাট |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
বাইপাসের পাশ দিয়ে নেমে গিয়েছে সরু এবড়োখেবড়ো রাস্তা। পাশে বিশাল ভেড়ি। একটু এগোলেই চোখে পড়বে সারি সারি জামাকাপড় শুকনো হচ্ছে এলাকা জুড়ে। তার ভিতর দিয়ে এগিয়ে গেলেই দেখা যায় বিশাল পুকুরের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় পাথরে চলছে কাপড় কাচা। কোথাও আবার বড় বড় মাটির গামলায় রয়েছে সাবান জল, ব্লিচিং এবং নীল জল। কিন্তু যে জায়গায় এত বড় দক্ষযজ্ঞ চলছে, সেই জায়গার পরিকাঠামো বলতে কার্যত কিছুই নেই। ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন তপসিয়া এলাকার ছাপ্পান্ন তালাও এলাকার দীর্ঘ দিনের ধোবি ঘাট বা ধোবা ঘাটের বর্তমান ছবিটা বেশ অস্বাস্থ্যকর। |
|
কলকাতা পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের এই জায়গায় বহু বছর ধরে চলে আসছে কাপড় ধোয়ার কাজ। শহরের বিভিন্ন হোটেল বা এলাকার বিভিন্ন লন্ড্রি থেকে কাপড় এসে জমা হয় এই জায়গায়। আগে অনেকগুলি পুকুর থাকলেও বতর্মানে একটিই মাত্র বড় পুকুর, বাকি তিনটি মাঝারি মাপের। আর এই জলেই প্রতি দিন চলে হাজার হাজার কাপড়জামা কাচা। খুব ভোর থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত চলে কাপড় কাচা। সাত সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় বড়বাজার, পোস্তা, ধর্মতলা, বাইপাস সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা, এমনকী, হাওড়া থেকে পুঁটলি করে কাপড় আনার কাজ। সারাদিন ধরে কাচা, তারপর শুকনো করার পরে আবার সেই কাপড় ফিরিয়ে দিয়ে আসতে হয় দোকান কিংবা হোটেলগুলিতে। আগে হাসপাতালের কাপড়ও কাচা হত এখানেই। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পুরসভা থেকে নির্দেশ দেওয়ার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের কাপড় কাচা। কিন্তু তার পরেও যে জায়গায় প্রতি দিন হাজার হাজার কাপড় কাচা ও শুকনো হচ্ছে, সেই জায়গার পরিস্থিতি রীতিমতো অস্বাস্থ্যকর। |
|
এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হাজারখানেক মানুষ বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন। এই কাজের জন্য তাঁরা এখানেই থাকতে বাধ্য হন। অথচ এত বছর ধরে থাকলেও তাঁরা ন্যূনতম পরিষেবাও পান না বলে তাঁদের অভিযোগ। এমনকী, এখানে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইপাস সংলগ্ন এই এলাকায় বেশ কয়েকশো মানুষের বসবাস দীর্ঘ দিন ধরে। অধিকাংশই বিহারের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হলেও ভোট দেন এখানেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও বার বার স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে শুরু করে মেয়রের কাছে অভিযোগ জানিয়েও সামান্য পানীয় জলটুকুও মেলেনি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ধোবি ঘাটে কাজ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন এক ব্যক্তি বললেন, “বহু বার এলাকার কাউন্সিলরকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। অথচ আমরা পরিবার নিয়ে বংশ পরম্পরায় এখানে বসবাস করছি।”
যদিও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং পরিষেবা প্রসঙ্গে এলাকার কাউন্সিলর তৃণমূলের রাফত জাভেদ বলেন, “ওই এলাকায় শুধুমাত্র লোকজন এসে কাপড় কেচে বিকেলে বাড়ি চলে যান। ওখানে কেউ থাকেন না। তাই পরিষেবার দেওয়ার কোনও কথা ছিল না।” এলাকার বেশ কিছু মানুষের বক্তব্য, তাঁরা ইতিমধ্যেই মেয়রের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
ধোবি ঘাট প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি নিজে ওদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে নিষ্পত্তি করব।”
|
|
|
|
|
|