দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
অপচয়ের অভিযোগ
জলের প্রতীক্ষায়
থা ছিল সব বাড়িতে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের সংযোগ যাবে। কিন্তু পেয়েছে মাত্র কয়েকটি বাড়ি। ফলে পানীয় জলের জন্য কয়েকটি টাইমকলই ভরসা। এই অবস্থা বজবজ দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির চকমানিক গ্রাম পঞ্চায়েতের চকদৌলত গ্রামের। অবস্থার কথা স্বীকার করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানান, ওভারহেড ট্যাঙ্কের জলধারণ ক্ষমতা কম থাকায় নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অনেকেই পানীয় জলের সংযোগ নিয়ে চাষের কাজে ব্যবহার করছেন। ফলে জলের অপচয় হচ্ছে।
এই গ্রামের সব বাড়িতে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয় ডোঙ্গারিয়া ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। ঠিক ছিল প্ল্যান্ট থেকে ওভারহেড ট্যাঙ্ক হয়ে পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি এবং রাস্তার মোড়ে বিশুদ্ধ জল পৌঁছে দেওয়া হবে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কয়েকটি বাড়ি এবং মোড়ে সংযোগ পৌঁছলেও অধিকাংশ বাড়িই তা পায়নি। তা ছাড়া আবেদন করেও সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ওই কয়েকটি টাইমকলই ভরসা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়পুরে ২০০২-এ ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে জল সরবরাহ করতে ডোঙ্গারিয়া জলপ্রকল্প তৈরি হয়। তৈরি হয় ছ’টি ওভারহেড ট্যাঙ্কও। এর একটি ট্যাঙ্ক চকদৌলত গ্রাম সংলগ্ন কালীতলা মোড়ে রয়েছে। ওই ট্যাঙ্ক থেকে সাতটি গ্রামে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত এক বছর নতুন সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে পানীয় জলের জন্য চকদৌলতের ভরসা কয়েকটি টাইমকল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েকটি বাড়ি থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয়। তা ছাড়া অন্য কাজের জন্য নলকূপের আর্সেনিকযুক্ত জলই ব্যবহার করতে হয়।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ২০০২-এ প্রকল্প তৈরির সময়ে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয় ৩০০ থেকে ৪০০ জন প্রতি একটি করে টাইমকল তৈরি হবে। কিন্তু দেখা যায় জলের অপচয় বাড়ছে। সিদ্ধান্ত হয়, বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু সে কাজ শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় বাড়ি বাড়ি জল দিতে গেলে যে পরিমাণ জল দরকার তা ওভারহেড ট্যাঙ্কের ক্ষমতার থেকে বেশি। তাই নতুন করে সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। চকমানিক পঞ্চায়েতের প্রধান সজল মাইতি বলেন, “জনসংখ্যা বেড়েছে। ফলে জলের চাহিদাও বেড়েছে। কিন্তু ট্যাঙ্কের জলধারণ ক্ষমতা সীমিত। তাই এখন সব বাড়িতে সংযোগ দিতে পারছি না।” যদিও জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই সব অঞ্চলে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল পানের পরিবর্তে চাষের কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ পেয়েছি। এই অপচয় বন্ধ না হলে সকলে জল পাবেন না।” অপচয়ের কথা স্বীকার করে সজলবাবু বলেন, “অনেকেই বাড়ির কাজের জন্য সংযোগ নিয়ে গোপনে লাইন বসিয়ে চাষের কাজে ব্যবহার করেন। আমরা এই অপচয় বন্ধ করার জন্য ব্লকে ব্লকে প্রচার চালাচ্ছি। বন্ধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথাও বলছি। কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও সব জায়গায় অবশ্য অপচয় বন্ধ করতে পারিনি।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.