|
|
|
|
কারখানার দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলি শ্রমিককে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কারখানায় দখলদারি নিয়ে খড়্গপুরে ফের সংঘর্ষে জড়াল সিপিআই ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। শুক্রবার সংঘর্ষ বাধে খড়্গপুরের রূপনারায়ণপুর এলাকায়, নির্মীয়মাণ ট্রাক্টর ইন্ডিয়া লিমিটেডে। কারখানায় কার কর্তৃত্ব থাকবে--তা নিয়েই সিপিআই ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৯ জন। তাঁদের মধ্যে এক জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধও হন। আহতদের মেদিনীপুর ও খড়্গপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির অভিযোগ, “জমিহারা শ্রমিকরা কারখানার নির্মাণকাজ করছিলেন। হঠাৎ তাঁদের উৎখাত করতে সশস্ত্র সিপিআই সমর্থকেরা কারখানায় হানা দেয়। গুলি চালায়। তিন জন শ্রমিক গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের গুলি লেগেছে। ওই শ্রমিকরা আমাদেরই সমর্থক।” অন্য দিকে, সিপিআই নেতা বিল্পব ভট্ট বলেন, “কারা কারখানায় কাজ করবেন তা নিয়ে কিছুদিন আগেই প্রশাসন বৈঠক করেছিল। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতোই শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। হঠাৎ সেখানে তৃণমূলের লোকজন গিয়ে হামলা চালায়। তাতে আমাদের সংগঠনের ৬ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।” দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি বলেন, “একটা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত চলছে।” রূপনারায়ণপুরে দীর্ঘদিন ধরেই সিপিআইয়ের দাপট রয়েছে। সিপিএমেরও সংগঠন ছিল। সিপিআইয়ের পরেই ওই এলাকায় ক্ষমতা বেশি কংগ্রেসের। এত দিন ধরে সিপিআই ও কংগ্রেস মিলেই ওই এলাকার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ থেকে শুরু করে সিন্ডিকেট গড়ে কাঁচামাল-নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ করত বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তারাও বিভিন্ন কারখানায় সংগঠন বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। শ্রমিক নিয়োগ এবং কাঁচামাল সরবরাহের ‘দাবিদার’ হচ্ছে তারাও। তা নিয়েই বেশ কিছু দিন ধরে গোলমাল চলছে। এ দিনও সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে বচসা বাধে তৃণমূলের লোকজনের। মারামারিও বেধে যায়। দু’পক্ষই তির, লাঠিসোটা নিয়ে তৈরি ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারই মাঝে কেউ এক জন গুলিও চালিয়ে দেয়। তাতেই জকপুরের বাসিন্দা যুগল নায়েক আহত হন। তাঁর ডান পায়ে গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পুলিশ পৌঁছতেই অবশ্য দু’পক্ষই রণে ভঙ্গ দেয়। আপাতত, রণে ভঙ্গ দিলেও ফের এলাকা দখলের লড়াইয়ে দু’পক্ষই যে মরিয়া থাকবে, তার আভাসও মিলেছে রাজনৈতিক নেতাদের কথায়। কারণ, শ্রমিক নিয়োগ ও কাঁচামাল সরবরাহে প্রচুর মুনাফা। কেউই ওই মুনাফা ছাড়তে রাজি নয়। ফলে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা থেকেই যায়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। যাতে ফের সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে সে-দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। তবে, এই ডামাডোলে রেলশহরে শিল্প-বিকাশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। |
|
|
|
|
|