হাওড়ার প্রাথমিক স্কুল
তিন বার খাতা দেখার পরেও নিয়োগ ঝুলে
রীক্ষা দিয়েছেন এক বার। খাতা দেখা হয়েছে তিন বার। কিন্তু তাতেও চাকরি মেলেনি প্রার্থীদের। হাওড়া জেলায় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে জটিলতা কিছুতেই কাটছে না। এতে প্রার্থীরা যেমন হতাশ, তেমনই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের অভাবও পূরণ হচ্ছে না।
২০১০ সালের শেষে জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদ লিখিত পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে চাকুরিপ্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে ফেলেছিল। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২৯ হাজার প্রার্থী। তার পরে গত এক বছর ধরে কখনও আদালতের রায়ে, কখনও বিভাগীয় মন্ত্রীর নির্দেশে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র বার বার খতিয়ে দেখা হয়েছে।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে হাওড়াতেও শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদ বিজ্ঞাপন দেয় ২০০৯-এর গোড়ায়। তখন মোট শূন্য পদ ছিল ১৮৭৪। শূন্য পদের ১৫ গুণ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় ডাকে সংসদ। লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১০-এর ৬ জুন। লিখিত পরীক্ষার পরে শূন্য পদের পাঁচ গুণ প্রার্থীকে জুলাই-অগস্ট মাসে সাক্ষাৎকারে ডাকা হয়। সাক্ষাৎকারে ডাক পাননি এমন কয়েক জন প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। আদালত নির্দেশ দেয়, সবার উত্তরপত্র খতিয়ে দেখতে হবে।
নিয়মানুযায়ী, লিখিত পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে চাকুরিপ্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে প্রাথমিক স্কুল সংসদই। সেটা তারা পাঠিয়ে দেবে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরে। তারা তালিকাটি অনুমোদন করে তা ফেরত পাঠাবে স্কুল সংসদে। তারই ভিত্তিতে নিয়োগপত্র দেবে স্কুল সংসদ। আদালতের নির্দেশে ২৯ হাজার খাতা ফের খতিয়ে দেখার পরে ২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্কুল সংসদ চাকুরিপ্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে তা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু তালিকাটি অনুমোদিত হওয়ার আগেই বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষিত হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের কর্তৃত্ব বামফ্রন্টের হাত থেকে চলে আসে তৃণমূলের হাতে। স্কুল সংসদের সভাপতি মনোনীত হন পুলক দেব। নতুন করে সংসদ গঠিত হওয়ার পরেও নিয়োগপত্র হাতে না-পেয়ে চাকুরিপ্রার্থীরা রাজ্যের তৎকালীন স্কুল শিক্ষামন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কাছে দরবার করেন। তিনি তাঁদের জানিয়ে দেন, বামফ্রন্ট আমলে করা তালিকায় দুর্নীতি রয়েছে। সব উত্তরপত্র ফের খতিয়ে দেখার জন্য তিনি নির্দেশ দেন স্কুল শিক্ষা দফতরকে। মন্ত্রীর নির্দেশে ২৯ হাজার উত্তরপত্র স্কুল সংসদ থেকে আনিয়ে পরীক্ষা করে দেখে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর।
এই দফতর সূত্রের খবর, সেই কাজটি হয়ে গিয়েছে গত জুলাই মাসে। উত্তরপত্র পরীক্ষার পরে তারা সংসদের সভাপতিকে সরাসরি নির্দেশ দেয় অবিলম্বে প্যানেল তৈরি করার জন্য। সেই প্যানেল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। গত ১০ অগস্ট সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেও প্যানেলটি তৈরি করেনি সংসদ। এ বারে বেঁকে বসেন খোদ সভাপতি। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, বারবার তারা সংসদ সভাপতিকে প্যানেল তৈরি করতে বললেও তিনি তা পাঠাননি। চাকুরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংসদ সভাপতি, রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর, এমনকী রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করে অবিলম্বে নিয়োগের দাবি জানানো হয়। কিন্তু তার পরেও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি বলে অভিযোগ। আপাতত তিনি যে কোনও প্যানেল পাঠাচ্ছেন না সে বিষয়টি জানিয়ে সংসদ সভাপতি পুলক দেব বলেন, “এ ব্যাপারে আমার কিছু বক্তব্য রয়েছে। আমি তা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর এবং মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি তাঁদের মতামতের জন্য।” রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের অধিকর্তা দিব্যেন মুখোপাধ্যায় বলেন, “সংসদ সভাপতির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। তিনি কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। এটা অবশ্য মন্দের ভাল। এত দিন চুপচাপ ছিলেন। একটা অন্তত চিঠি লিখেছেন। আমরা এর উত্তর দিয়ে দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.